আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত কবি জসিম উদ্দিনের মতো করে চিন্তা করা। কবির মতো গরিব অসহায় মানুষকে ভালোবাসা। প্রতিবেশীকে উপোস রেখে নিজে খাওয়ার মাঝে, বিলাসিতার মাঝে আসলে তৃপ্তি পাওয়া যায় না। প্রকৃত তৃপ্তি তখনই পাওয়া যায় যখন কারও প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া হয়।
করোনা ভাইরাসের সময় পুরো দেশই কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছে দেশ। এতে সারাদেশে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। এসব মানুষ খাদ্য সংকট ও অর্থকষ্টে ভুগছেন। এসব দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে অপরের মুখে হাসি ফোটানোর উদ্দেশ্যে আমরা কতজন পেরেছি? এখন তো পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, নিজের খাবার অন্যকে বিলিয়ে দেয়া তো দূরের কথা, বরং অন্যের মুখের খাবার কেড়ে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ করছি। কবি কামিনী রায় বলেছিলেন-আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে, আসে নাই কেহ অবনী পরে, সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে। এই মানবিক বোধ সবার মধ্যে জেগে উঠুক। ‘মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব’-এ কথা যেমন সত্যি আবার বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানুষ যে কত অসহায় হয়ে পড়ে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো সওয়াবের কাজ।
এই করোনা দুর্যোগের সময় বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি, চিকিৎসক, সাংবাদিকরা অসহায় মানুষের পাশে সর্বদা নিয়োজিত রয়েছেন। দেশের নাগরিকদের জন্য এসব পেশাজীবিরা মাঠে তৎপর। এই সময়ের প্রকৃত যোদ্ধা এবং সেবক তারাই। প্রশাসন ডাক্তার, সাংবাদিক এবং করোনায় মৃত্যুদের কাফন-দাফনে নিয়োজিত তরুণ আলেমদের স্যালুট। আসুন কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে যার যার সামর্থের আলোকে এগিয়ে আসি। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজে সেই মানুষেরই একটা অংশ গরিব-দুস্থ। তারা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকারগুলো তাদেরও ন্যায্য প্রাপ্য। তাই গরিব-অসহায়, দুস্থের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রদর্শন ও সহানুভূতিশীল হওয়া অত্যাবশ্যক।
তাই আসুন, আমরা মানবিক মূল্যবোধ থেকে সবাই মিলে শীতে ফুটপাতে বা খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পাশে সামর্থ্যের ভিত্তিতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করি।
লেখক : বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তি, শিক্ষানুরাগী ও দেশ প্রেমিক রুহি ফাউন্ডেশন এর প্রদান উপদেষ্টা হাজী শাহ আলম।

