প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, কারও পকেট থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদসহ অনেকেই চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে। কিন্তু ধ্বংস করতে পারবে না। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম।
তিনি এক-এগারো পরিস্থিতি তুলে ধরে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী ওই বক্তব্য তুলে ধরে বর্তমানে তেমন কোনও পরিস্থিতি নেই বলে উল্লেখ করেন।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটোর প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এ কারণে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে জ্বালানি তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। এর প্রেক্ষিতে সরকারকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং গরিব, নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক ও সচল রাখতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছি। পদক্ষেপগুলো হলো— আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গত বছরের ৫ আগস্ট গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয়/পুনঃনির্ধারণ করা হয়।
সংসদ নেতা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। গত বছর ডিসেম্বর মাসেও আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের গড় মূল্য ১০৬ মার্কিন ডলার/ব্যারেল, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ হাজার ২৭৫ টাকা। সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেলের চাহিদা বছরে প্রায় ৬৮ দশমিক ৮৭ লাখ মেট্রিক টন, যার ৭০ ভাগই (প্রায় ৪৮.৩২ লাখ মেট্রিক টন) ডিজেল বর্তমানে ডিজেল বিক্রয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দৈনিক প্রায় ৩ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। যা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশেও লোকসান পূরণ করে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিদ্যমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধি করা। সেজন্য সরকারি ব্যয় হ্রাসের উদ্দেশে কতিপয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন: বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত প্রকল্পগুলো এ/বি/সি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে ‘বি’ ক্যাটাগরি প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে জিওবি অংশের অনূর্ধ্ব ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরি প্রকল্পগুলোর অর্থছাড় আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্প দ্রুত সমাপ্তির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

