আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ২০২২ সালে মোট ৯ লাখ ৯৬ হাজার আশ্রয়ের আবেদন জমা পড়েছে। যা তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় অন্তত ৫৩ শতাংশ বেশি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

ইউরোপীয় ইউনিয়নে গত বছর আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন রেকর্ড ১০ লাখ মানুষ। আবেদনকারীদের বেশিরভাগই সির‍িয়া, আফগানিস্তান, তুরস্ক, ভেনেজুয়েলা এবং কলম্বিয়ার নাগরিক। ইউরোপে একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে জার্মানিতে।

 

মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় বিষয়ক সংস্থা (ইইউএএ) এই তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ২০২২ সালে মোট ৯ লাখ ৯৬ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। যা তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় অন্তত ৫৩ শতাংশ বেশি।

 

ইইউএএ বলেছে, সর্বোচ্চ দুই লাখ ৪৪ হাজার আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে জার্মানিতে। এরপরই রয়েছে ফ্রান্স; দেশটিতে জমা পড়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার আবেদন। তৃতীয় স্থানে থাকা স্পেনে জমা পড়েছে এক লাখ ১৮ হাজার আশ্রয় আবেদন। আর চতুর্থ স্থানে থাকা অস্ট্রিয়ায় জমা হয়েছে এক লাখ ৯ হাজার আশ্রয় আবেদন। পঞ্চম স্থানে থাকা ইতালিতে জমা হওয়া আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা ৮৪ হাজার। অন্তত ৭০ শতাংশ আবেদনকারী এই দেশগুলোতেই আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন।

 

আশ্রয় চেয়ে আবেদন করা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৪২ হাজার অভিভাবকহীন শিশু রয়েছে। এই সংখ্যা ২০১৬ সালের অভিবাসন বিপর্যয়ের পর সর্বোচ্চ।

 

ইইউএএ জানিয়েছে, সংঘাত, সংঘর্ষ, জলবায়ু বিপর্যয়, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের কারণে উন্নত জীবনের আশায় অসংখ্য মানুষ অনিয়মিত অভিবাসনের পথ বেছে নিয়েছেন।

 

করোনা মহামারির বাধা দূর হওয়ার পর ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে গেলেও ২০১৫ সালের অভিবাসন সংকটের সময়কে এখনও ছাপিয়ে যায়নি। পরিসংখ্যান বলছে, সিরিয়া গৃহযুদ্ধের সময় অর্থাৎ ২০১৫ সালে ইউরোপে আশ্রয় চেয়েছিলেন ১৪ লাখ মানুষ। আর ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ।

 

• অভিবাসন সংকটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর ওই দেশ থেকে আসা মানুষদের বিশেষ অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন ইউরোপে। তবে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করা ব্যক্তিদের তালিকায় কোনও ইউক্রেনীয়কে অন্তর্ভুক্ত করেনি ইইউএএ।

 

সংস্থাটি বলছে, বিপুলসংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীর কারণে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায়, আবাসন নিয়ে চাপের মুখে পড়েছে জোটের অনেক সদস্য রাষ্ট্র।

 

• অভিন্ন অভিবাসন নীতি চায় ইইউ : পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির তীব্র বিরোধিতার মুখেও অভিন্ন অভিবাসন নীতি নিয়ে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকা ইউরোপের অভিন্ন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতি গত ৮ জুন আলোর মুখ দেখেছে। ওইদিন লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

এখন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইন অনুমোদন করে সেই বোঝাপড়া কার্যকর করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বছর ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে অর্থাৎ এ বছরের শেষ নাগাদ হলেও আইনটি পাস করার দিকে মনোযোগী ইউরোপীয় নেতারা।

 

তবে অভিন্ন এই নীতি কার্যকর হলে বিপদে পড়তে পারেন বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, মরক্কো, তিউনিশিয়া, সেনেগাল ও পাকিস্তান থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা। কারণ নতুন নিয়মে আশ্রয় আবেদনগুলো ইইউর বহিঃসীমান্তেই নাকচ হতে পারে। আবার যারা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে পারবেন তাদেরও অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা যাবে।

 

এই নীতি বাস্তবায়ন হলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয়প্রার্থীদের বোঝা সব দেশ মিলে ভাগ করা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোটভুক্ত যে দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অনীহা দেখাবে, সেই দেশকে অভিবাসী প্রতি ২০ হাজার ইউরো অর্থ দিতে হবে। আর এই ইস্যুতে আপত্তি জানিয়ে আসছে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি।

 

-সূত্র : ডয়চে ভেলে

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *