ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য লোকগবেষক ও সাংবাদিক সুমনকুমার দাশের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

এবার ১১টি বিভাগে ১৬ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ/গবেষণা, অনুবাদ, নাটক, শিশুসাহিত্য বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, পরিবেশ/বিজ্ঞান ক্ষেত্র, জীবনী ও ফোকলোর। এর মধ্যে ফোকলোর বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন লোকগবেষক ও সাংবাদিক সুমনকুমার দাশ।

 

প্রাকৃতজনদের আচার-কৃষ্টি-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যেই ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন সুমনকুমার দাশ। ১৯৮২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার সুখলাইন গ্রামে। তবে এখন সিলেট নগরের বাসিন্দা। পেশায় সাংবাদিক। ২০০৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় গণমাধ্যম প্রথম আলোতে যুক্ত রয়েছেন।

 

লোকসংস্কৃতি গবেষক, প্রাবন্ধিক, আখ্যানকার হিসেবে তিনি সুপরিচিত। অবসর আর কাজের ফাঁকে হাওরাঞ্চলসহ দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে সংগ্রহ করেছেন অসংখ্য লোকগান, লোকনাট্য ও পাঁচালির পাণ্ডুলিপি। তাঁর সংগ্রহে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি লোকগান রয়েছে। বেদে-বাইদ্যানিদের গান, ভিক্ষুক-সংগীত, ধামাইলগান, জারি-মার্সিয়া, পল্লিগীতি, মাজার-সংগীত, ঢপযাত্রা থেকে শুরু করে বাউল-ফকির পদাবলি কোনোটাই তাঁর চোখ এড়ায়নি।

 

বাংলার বিচিত্র লোকগান ও লোকসংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করে বিশিষ্টতা অর্জন করেছেন। গ্রামীণ মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনযাপনকে নাগরিক সমাজে নিরন্তর পরিচয় করিয়ে চলছেন। বাংলাদেশ ও কলকাতা থেকে প্রকাশিত তাঁর রচিত ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের অধিক।

 

লোকসাহিত্য নিয়ে লেখা তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ জাতীয়-আন্তর্জাতিক সাহিত্য-সাময়িকী এবং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত বইয়ের মধ্যে ‘লোকায়ত জীবন ও লোকসংস্কৃতি’, ‘বাংলাদেশের বাউল-ফকির : পরিচিতি ও গান’, ‘বাউলকোষ’, ‘লোকসংস্কৃতি লোকসাধক’, ‘লোকগান লোকসংস্কৃতি’, ‘বাউলসাধনা, লালন সাঁই ও অন্যান্য’, ‘লোকভাবন’, ‘শাহ আবদুল করিম : জীবন ও গান’, ‘গান থেকে গানে’, ‘লোকগানের বিচিত্র ধারা’, ‘লোকসাধকের দরবারে’, ‘ধীর পায়ে ধূলিপথে’, ‘লোকায়ত বাংলার পথ ধরে’, ‘বেদে-সংগীত’ উল্লেখযোগ্য। তাঁর সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে : ‘দুর্বিন শাহ সমগ্র’, ‘বাংলাদেশের ধামাইল গান’ ও ‘আরকুম শাহ সমগ্র’।

 

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ প্রাপ্ত অন্যরা হলেন কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ–গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে (যাত্রা, পালা নাটক, সাহিত্যনির্ভর আর্টফিল্ম বা নান্দনিক চলচ্চিত্র) মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান–কল্পবিজ্ঞান–পরিবেশবিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী–স্মৃতিকথা–ভ্রমণকাহিনি–মুক্তগদ্যে ইসহাক খান এবং ফোকলোরে তপন বাগচী।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *