ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি (এনজিএফএফএল) বিক্রির দরপত্র এ পর্যন্ত চারবার বাতিল হয়েছে। গত ২১ আগস্ট দরপত্র দাখিলের সময়ের আগে সকাল সাড়ে ৯টায় উপস্থিত ঠিকাদারদের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ঢাকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদারদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে যায়। ওইদিন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা ঝগড়ায় লিপ্ত থাকায় কেউই নির্ধারিত সময়ে দরপত্র বাক্সে জমা করতে পারেননি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

এদিকে, সময়মতো নিরাপত্তা জামানাত বাবদ টাকা জমা দিতে না পারায় আগের তিনটি টেন্ডার বাতিল হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, প্রতিরক্ষা বিভাগের আওতাধীন সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের কাছ থেকে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি (এলটিএম) আহ্বান করা হয়। ১১টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কেনে। কিন্তু দরপত্র দাখিলের শেষ দিনে নির্ধারিত সময়ের আগেই ১১টি শিডিউল কেনা প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদাররা উপস্থিত থাকলেও নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায় লিপ্ত থাকায় কেউ দরপত্র জমা দিতে পারেননি। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কোনো দরপত্র জমা না পরায় নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। ফের দরপত্র আহ্বান করা হবে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

এদিকে, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর এনজিএফএফএল বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। এতে ৯টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ১০৩ কোটি ৭৫ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে কিনে নেয় সিলেটের ‘মেসার্স আতাউল্লাহ’ নামের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিয়মমাফিক টাকা জমা না হওয়ায় এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বাতিল হয়ে যায় টেন্ডার।

২০২১ সালের ১১ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে পুরনো সার কারখানাটি ২১১ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেন মেসার্স সাইদুর রহমান। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানও সময়মতো নিরাপত্তা জামানত জমা দিতে না পারায় বাতিল হয়ে যায় টেন্ডার। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর তৃতীয় দফায় টেন্ডারে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে ২৭৫ কোটি টাকায় ঢাকার প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কিনে নিয়েছিল পুরনো সার কারখানাটি। পরে জানা যায় প্রতিষ্ঠানটি আশ্রয় নিয়েছিল জালিয়াতির। নিরাপত্তা জামানত বাবদ ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার জমা দিলেও তা ভুয়া প্রমাণিত হয়। যার কারণে বাতিল হয়েছিল টেন্ডার।

 

শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ টি এম বাকী বলেন, আগের তিনবার নিরাপত্তা জামানত না দিতে পারায় টেন্ডার বাতিল হয়েছিল। কিন্তু ২১ আগস্ট কোনো দরপত্র নির্ধারিত সময়ে জমা না হওয়ায় আইন অনুযায়ী টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। দরপত্র কেনা ১১টি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদাররা উপস্থিত থাকলেও কেন দরপত্র জমা দেননি এ বিষয়ে তিনি বলেন, দরপত্র কেনা প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদাররা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কেন তারা জমা দেননি একমাত্র তারা (ঠিকাদাররা) বলতে পারবেন। ঠিকাদারদের ঝগড়া এটা তাদের নিজেদের বিষয় বলে জানান তিনি। ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিয়াবুল হোসেন বলেন, ফের দরপত্র আহবান করা হবে।

 

উল্লেখ্য, বিসিআইসির মাতৃ শিল্প প্রতিষ্ঠানখ্যাত এনজিএফএফ লিমিটেড ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালের ৩০ জুন কারখানাটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিকল্প হিসাবে পার্শ্ববর্তী স্থানে নতুনভাবে স্থাপিত শাহজালাল সার কারখানার অধীনে এ প্রতিষ্ঠানের সব জনবল ন্যস্ত করা হয়।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *