ডায়ালসিলেট  ডেস্ক:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে সংস্কারের জন্য  আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও দেবো। তবে মৌলিক সংস্কার করে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিতে হবে। ২০২৪ সালের জুলাই গণহত্যার বিচার করতে হবে। তবে আমরা আইন হাতে তুলে নিতে চাই না। পরাজিত শক্তি এখনো বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। গতকাল সকালে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে মহানগরী জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার চালিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সমপ্রীতি বিনষ্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু এদেশের মানুষ তাদের সে পাতা ফাঁদে পায় দেয়নি। দেশের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সে ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না। সবার পরিচয় হবে আমরা বাংলাদেশি। কুমিল্লা নামে বিভাগ না দেয়ায় বিগত সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নামের কারণে বিভাগ না দিয়ে একটি জেলার মানুষের প্রতি জুলুম করা হয়েছে। দেশের এক ইঞ্চি মাটির প্রতি অবজ্ঞাকারী কোনো ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা নেই। তিনি কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ ছাড়াও কুমিল্লা বিমানবন্দর সচলের যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন।  এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগরী জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন ও সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমানের যৌথ পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, মাওলানা আব্দুল হালিম, চাকসুর সাবেক ভিপি এডভোকেট জসীমউদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মু. আবদুর রব, মোবারক হোসেন প্রমুখ।
শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ড. আবরার আহম্মদ। সমাবেশের উদ্বোধন করেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ মাছুম মিয়ার পিতা শাহীর মিয়া। দীর্ঘ ১৯ বছর পর অনুষ্ঠিত সমাবেশ উপলক্ষে গত কয়েকদিন থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালায় জামায়াত। দলীয় আমীরকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণ দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো নগরী। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই নগরীর ২৭টি ওয়ার্ড ও ৬টি ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন নেতাকর্মীরা।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

জামায়াত আমীর বলেন, গত সাড়ে ১৬ বছর আদালত আঙিনা ছিল বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের দখলে। মূলত পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের অস্তিত্ব ধ্বংস করার মিশন শুরু হয়। এরপর ধাপে ধাপে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। বিশেষ করে জামায়াতের ওপর সবচেয়ে বেশি অবিচার করা হয়। আমাদের শীর্ষ নেতাদের একে একে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেয়া হয়। অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। আমাদের কার্যালয়গুলো অন্যায়ভাবে বন্ধ রাখা হয়। তবে এত নির্যাতনের পরও আল্লাহর রহমত ও নেতাকর্মীদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা টিকে আছি। দেশের প্রশ্নে জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। এসময় তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর দাবিও জানান।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় শুরা ও অঞ্চল টিম  সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত ভূঞা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও টিম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমীর এডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *