ডায়ালসিলেট ডেস্ক:কুমিল্লায় প্রেস ব্রিফিংয়ে চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের নেপথ্য কারণ জানিয়েছে র্যাব-১১ সিপিসি-২। এ ঘটনায় মাস্টার মাইন্ড আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় ওই ঘাতককে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে কুমিল্লার র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল।
গ্রেফতার আকাশ মণ্ডলের বাড়ি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায়। তার বাবার নাম জগদীশ মণ্ডল। তিনি আট মাস ধরে এমভি-আল বাখেরা জাহাজে চাকরি করছিলেন।
বুধবার দুপুরে নগরীর শাকতলা র্যাব কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
মেজর সাকিব হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তৎপরতা এবং টেকনোলজি ব্যবহার করে মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়া ও জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহারের কারণেই সাতজনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ঘাতক ইরফান।
তিনি বলেন, আকাশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহার, বেতন-বোনাসে অনিয়ম এবং কর্মচারীদের প্রতি অবহেলা তাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এ থেকেই আকাশ প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে রাখেন।
‘পরে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে আকাশ তরকারির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে মাস্টারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন। পরে অন্যরা টের পেয়ে যেতে পারে—এমন আশঙ্কায় তিনি একে একে ছয়জনকে হত্যা করেন। ’
সাকিব জানান, আকাশের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের পর সে নিজেই জাহাজ চালিয়ে মাঝিরচরে পৌঁছান। পরদিন সকালে ট্রলারে করে পালিয়ে যান এবং বাগেরহাটের চিতলমারিতে আত্মগোপন করেন।
তিনি আরও জানান, আকাশের কাছ থেকে রক্তমাখা জিন্স, মোবাইল ফোন, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা এবং অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে অন্য কোনো সহযোগী ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে হাইমচর থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। লাইটার জাহাজ মালিকদের পক্ষে মো. মাহাবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
চাঁদপুরের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে তা চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মাঝিরচর এলাকার একটি জাহাজ থেকে পাঁচজনের লাশ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুই জন মারা যান।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

