Last updated on সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১ at ০৭:৫৫ অপরাহ্ণ
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!আন্তর্জাতিক ডেস্ক::বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য নতুন ডিক্রি জারি করেছে তালেবানরা। এতে জুড়ে দেয়া হয়েছে কঠিন সব শর্ত। সে অনুযায়ী বেসরকারি কলেজ, বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্রীদের অবশ্যই আবায়া পরতে হবে। ব্যবহার করতে হবে মুখঢাকা নেকাব। পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতে হবে আলাদা। তা যদি একান্তই সম্ভব না হয় তাহলে মাঝে পর্দা ব্যবহার করে আলাদা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে তালেবানদের শিক্ষা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ একটি ডকুমেন্ট ইস্যু করেছে।এতে আরো বলা হয়েছে, নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করতে পারবেন শুধু নারী শিক্ষিকারা। কিন্তু ন্যূনতম যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে উত্তম চরিত্রের অধিকারী কোনো বয়স্ক পুরুষ শিক্ষক দিয়ে তাদের শিক্ষা দেয়া যাবে। তালেবানদের এই ডিক্রি প্রযোজ্য হবে বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
২০০১ সালে তালেবানদের শাসনের ইতি ঘটার পর এসব কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে। তাই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করার দিকে দৃষ্টি দিয়েছে তালেবানরা। তালেবানদের বিগত মেয়াদে বালিকা ও যুবতীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষা বঞ্চিত রাখা হতো। কারণ, তখন সমলিঙ্গের জন্য আলাদা ক্লাসরুমের আইন জারি ছিল। অর্থাৎ নারী ও পুরুষরা একই সঙ্গে এক ক্লাসে বসে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারতেন না। তাছাড়া বালিকা বা যুবতী বা কোনো নারীকে ঘরের বাইরে বের হতে হলে তার সঙ্গে একজন পুরুষ সঙ্গী থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। শনিবার নতুন করে যে রেজ্যুলুশন ইস্যু করা হয়েছে, তাতে এনভেলপের মধ্যে যেমন চিঠি ঢুকিয়ে আটকে দেয়া হয়, সেভাবে নারীদের পুরো শরীর ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়নি। তবে মুখম-লের বেশির ভাগ ঢেকে রাখার জন্য নেকাব পড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমন নেকাব পরলে শুধু চোখ বাইরে থাকবে।
গত কয়েক বছরে কাবুলের রাজপথ থেকে বোরকা এবং নেকাব পুরোপুরি হাওয়া হয়ে গিয়েছিল। ছোট ছোট শহরগুলোতে অল্পস্বল্প দেখা যেত এসব। আজ সোমবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন খুলে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে, তখনই ওই ডিক্রি জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইউনিভার্সিটিতে নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেয়ার জন্য নারী শিক্ষিকা নিয়োগ দিতে হবে। নারী এবং পুরুষরা ইউনিভার্সিটিতে আলাদা গেট দিয়ে প্রবেশ এবং বের হতে পারবে। এতে আরো বলা হয়েছে, যদি নারীদের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে উত্তর চরিত্রের রেকর্ড আছে এমন বয়স্ক পুরুষ শিক্ষকদের দিয়ে নারীদের শিক্ষা দিতে হবে। বর্তমান এই নির্দেশনার ফলে নারীদেরকে পুরুষ শিক্ষার্থীদের চেয়ে ৫ মিনিট আগে ক্লাস শেষ করতে হবে, যাতে পুরুষরা তাদেরকে ক্লাসের বাইরে উত্যক্ত করতে না পারে। ক্লাস শেষ হলে নারীদেরকে ওয়েটিং রুমে অবস্থান করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত বালক বা যুবকরা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে না যায়। তালেবানদের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ ডিক্রি জারি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর বলেছেন, প্রাকটিক্যালি এ এক কঠিন পরিকল্পনা। আমাদের যথেষ্ট শিক্ষিকা বা প্রদর্শক নেই। এমনকি বালিকা বা যুবতীদের আলাদা করে ক্লাস করার মতো পর্যাপ্ত কক্ষ নেই। তা সত্ত্বেও তালেবানরা বালিকা ও যুবতীদেরকে স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দিচ্ছে, এটাই বড় ইতিবাচক পদক্ষেপ। ওদিকে এবার ক্ষমতায় আসার আগেপরে তালেবানরা অধিকতর সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। তারা সবার অংশগ্রহণে সরকার গঠনের কথা বলেছে। তবে মন্ত্রী পদে কোনো নারীকে বসানো হবে না বলে এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তালেবানদের এক সূত্র। উল্লেখ্য, গত ২০ বছর ধরে, যখন তালেবানরা ক্ষমতায় ছিল না, এ সময়ে আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করার পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল কার্যত পুরুষ প্রফেসরদের ওপর ভর করে।
ডায়ালসিলেট এম/

