ডায়াল সিলেট ডেস্ক : শ্রীমঙ্গলে টানা তিন দিনের প্রচেষ্টার পর অবশেষে একটি কাল নাগিনী সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে শ্রীমঙ্গলের কালিঘাট এলাকার জুয়েল কানুর বাড়ি থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয়।পরে শুক্রবার সকালে বাড়িটির ছাদে আবারও সাপটি দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান দেব সজল। এবারে তন্ন তন্ন করে খুঁজে সাপটি সন্ধান পাওয়া যায়। পরে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল জানান, গত বুধবার (২৫ মে) জুয়েল কানু ফোন করে তাদের জানান, তার তিনতলা বাড়ির অদ্ভুত রঙের একটি সাপ দেখা গেছে। সাপটি ছোট আকৃতির হলে দেখতে ভীতিকর। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ওই বাড়িতে ছুটে যান স্বপন দেব সজল। কিন্তু পুরো ছাদ তল্লাশি করেও সেদিন সাপটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপরের দিন আবারও সাপটি দেখা গেছে এমন খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান সজল। কিন্তু সেদিনও তল্লাশি করে সাপটির অস্তিত্ব মেলেনি। কিন্তু পর পর দু’দিন সাপটি দেখে বাড়ির সদস্যদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।স্বপন দেব সজল বলেন, জানা গেছে সাপটির নাম কাল নাগিনী। দেখতে অপরূপ সুন্দর। সাপটির শরীর জুড়ে নানা রঙের আবরণে ডাকা। এর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর এটিকে অবমুক্ত করা হবে।কাল নাগিনী সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, দেশে পাওয়া দৃষ্টিনন্দন সাপগুলোর মধ্যে কাল নাগিনী (Ornate Flying Snake) অন্যতম। অঞ্চলভেদে সাপটিকে উড়াল সাপ, সুন্দরী সাপ, কাল সাপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নামের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং স্নেক’ রয়েছে, তবে সাপটি মোটেও উড়তে পারে না। এটি গাছের উঁচু ডাল থেকে নিচু ডালে লাফিয়ে নামে। কাল নাগিনী দিবাচর ও শান্ত স্বভাবের সাপ। খুব বেশি বিরক্ত না হলেও কামড়ায় না। এরা গিরগিটি, বাদুড়, ইঁদুর, ছোট পাখির ডিম ও কীটপতঙ্গ খায়। এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। সাপটি একবারে ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে দুইমাস পর বাচ্চা ফোটে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!তিনি বলেন, কাল নাগিনী নির্বিষ সাপ। অথচ নাটক-সিনেমায় কাল নাগিনীকে ভয়ংকর বিষধর সাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে মানুষ সাপটি দেখামাত্রই মেরে ফেলে। এতে সুন্দর প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

