ডায়ালসিলেট ডেস্ক :ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশি-বিদেশি, প্রতিবেশী এবং অভ্যন্তরীণসহ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভস ও জাস্ট নিউজের সম্পাদক এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে যুক্তরাষ্ট্রের “লাভ শেয়ার বিডি-ইউএস” এর উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনে সাংবাদিক সমাজের ভূমিকা ও বর্তমান করণীয়’ শীষর্ক এক আলোচনা এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন। অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৫ সাংবাদিক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া কথা ছিলো। তবে দু’টি পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত না থাকায় তিন পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বাকি দু’টি পরিবারের কাছে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, যাদের ত্যাগে মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারছি। এখনো আমাদের পুরোপুরি মুক্ত ভাবলে চলবে না। কারণ আমাদের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি, প্রতিবেশী এবং অভ্যন্তরীণসহ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র চলছে বললেই হবে না, কোথায় কোথায় সমস্যা, সেটাকে বের করতে হবে। যাতে আমাদের শক্ররা বুঝতে পারেন যে, তাকে সহজে ঘায়েল করা যাবে না।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর অনেক সাংবাদিক বেকার হয়েছেন। অনেকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। আমি মনে করি, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পেশায় নেই, সবাই একটা তালিকা করে- যেখানে যেখানে দোসররা আছে, আমি কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে না। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে পেশাদার সাংবাদিকদের জায়গা হয়। আর দীর্ঘদিন যারা চাকরিবঞ্চিত তারা যাতে ন্যায্য পাওনা পান এবং তারা যাতে ওই দায়িত্ব নিতে পারেন। এজন্য তালিকা করে, প্রয়োজনে সরকারের যে তথ্য উপদেষ্টার মাধ্যমে কিংবা মালিকদের সরাসরি তালিকা দিতে হবে। কারণ তারা যাতে তাদের চাকরি ফেরত পায়, এটা তাদের ন্যায্য অধিকার।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম আবদুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে ৩৫ জন। আর জুলাই-আগস্টে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সাংবাদিক আহত হয়েছে ২২৬ জন। আর ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রত্যেক মাসে ৩০ থেকে ৩৫ সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছেন। আর সবমিলে ১৪০০ উপরে শহীদ হয়েছে। এটা পৃথিবীতে বিরল ঘটনা। এটা সম্ভব হয়েছে তরুণদের আত্মত্যাগের কারণে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ এক মাস ৫ দিনের টানা আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। সেই আন্দোলন যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের ৫ জন সাংবাদিক বন্ধু। তাদের রক্তের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এদের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। তারা যদি ভুলে যায় তাদেরকে মাঝে মাঝে আমাদেরকে মনে করিয়ে দিতে হবে। ভুলে গেলে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা হবে।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র চলছে। এজন্য আমাদের যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকবে হবে। চোখ ও কান খোলা রাখতে হবে। এই আন্দোলনে যেসব সাংবাদিক নিহত হয়েছেন তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী, যুক্তরাষ্ট্রের “লাভ শেয়ার বিডি-ইউএস” এর ফজলে এলাহী নওশাদ বক্তব্য রাখেন।এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে মেহেদী হাসানের বাবা মোশাররফ হোসেন, তাহির জামানের (প্রিয়) নানা শফিউল আলম, শাকিল হোসাইনের বাবা বেলায়েত হোসাইন।

