ডায়ালসিলেট ডেস্ক::পরকিয়া প্রেমের টানে ৩ শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করে পাষন্ড মা। ভাগ্যক্রমে দুই সন্তান বেঁচে গেলেও মৃত্যুর কাছে হার মানে ছোট মেয়ে সাথী আক্তার (৬)। ঘটনার এক বছর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে মূল রহস্য।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলে বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে পাষন্ড মা ফাহিমা খাতুন (২৮)।
তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামের টমটম চালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, আদালতকে ফাহিমা জানায় স্বামী অভাব অনটনের কারণে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওলিপুরে প্রাণ কোম্পানীতে চাকরি নেয় সে। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে পাশের বাড়ির বিত্তশালী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ফাহিমার। তাদের এ অবৈধ সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে তারা বুঝতে পারে ‘পথের কাটা’ ফামিহার ৩ শিশু সন্তান। তাই আক্তার ও ফাহিমা মিলে ৩ সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ি ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর পরকিয়া প্রেমিক আক্তার বিষ কিনে ফাহিমাকে দেয়। পরের দিন ১৮ অক্টোবর দুপুরে ফাহিমা জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে তিন শিশু সন্তানকে খাইয়ে দেয়। বিষক্রিয়া তারা ছটফট করতে থাকলে ওই দিন সন্ধ্যায় তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে এলে ছোট সন্তান সাথী আক্তার (৬) মারা যায়।
অপর দুই শিশু সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম (১০) ও রবিউল ইসলামকে (৭) দ্রুত সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সৌভাগ্যক্রমে তারা বেঁেচ যায়। এরপর সকলেই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকেন।
ঘটনার কিছুদিন যাবার পর আক্তার হোসেন ও ফাহিমার প্রেমের সম্পর্কটি এলাকায় প্রকাশ হতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। এতে ফাহিমার স্বামীর সন্দেহ বাড়তে থাকে। সে নিশ্চিত হয় ফাহিমা ও আক্তারমিলিতভাবেই তার শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে আসামীরা পলাতক ছিল।
গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফাহিমাকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাবাদে সে ঘটনা স্বীকার করে। ১ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সদর থানার ওসি মাসুক আলী ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।

