ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: আশা জাগিয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ১২৭ রান করেও জয়ের সুযোগ তৈরি করেছিল টাইগাররা।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

কিন্তু শেষ দিকে ইনিংসের শুরুর মতো বোলিং করতে না পারায় ৪ উইকেটে হেরে যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আমিনুল ইসলামের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন পাকিস্তানের লেগ স্পিনার শাদাব খান। ১০ বলে ২ ছক্কা আর এক চারে ২০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দলের জয়ে মাত্র ৮ বলে দুই ছক্কা আর এক চারে ১৮ রান করেন মোহাম্মদ নওয়াজ।

 

শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ।

 

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে মাত্র ৪০ রান। তবে আফিফ হোসনে, নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদি হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে ৮৭ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।

 

১২৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। ২৪ রানে পাকিস্তানের প্রথম সারির ৪ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান টাইগাররা। কিন্তু এই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।

 

পাকিস্তানের জয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন ফখর জামান, খুশদিল শাহ। শেষ দিকে রীতিমতো ব্যাটিংয়ে তাণ্ডব চালিয়েছেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ।

 

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১৬ রানে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। পাকিস্তানের এই সময়ের সেরা ক্রিকেটার ও অধিনায়ক বাবর আজমকে বোল্ড করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি হায়দার আলী। তাকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান মেহেদি হাসান।

 

২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় পাকিস্তান। পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কুল ছাত্রের মতো হাস্যকর রান আউট হন শোয়েব মালিক।

 

চার দশক ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে যাওয়া পাকিস্তানের এই সাবেক অধিনায়ক ক্রিজের বাইরে গিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন, এই সুযোগে বাংলাদেশ দলের তরুণ উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান দারুণ এক থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন। ৫.৬ ওভারে দলীয় ২৪ রানে ফেরেন শোয়েব মালিক। ৩ বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন তিনি।

 

এরপর খুশদিল শাহকে সঙ্গে নিয়ে ৫০ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান ফখর জামান। ৩৬ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন ফখর।

 

এরপর দলকে জয়ে উপহার দিতে অনবদ্য ব্যাটিং করে যান খুশদিল শাহ। তাকে আউট করে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান শরিফুল।

 

জয়ের জন্য শেষ ১৮ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। পাকিস্তানের দুই লেজের ব্যাটসম্যান শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ রীতিমতো ব্যাটিং তাণ্ডব চালাম।

 

১৮তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের মতো তারকা বোলারকে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে ১৫ রান আদায় করে নেন শাদাব-নওয়াজ। ঠিক পরের ওভারে শরিফুলও সুবিধা করতে পারেননি। ১৯তম ওভারে দুই ছক্কায় ১৫ রান খরচ করেন তিনি।

 

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রান। লেগ স্পিনার আমিনুলের করা দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন লেগ স্পিনার শাদাব খান।

 

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। টাইগার শিবিরে রুতেই আঘাত হানেন পাকিস্তানের তারকা পেসার হাসান আলী। তার গতির বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

 

এরপর পাকিস্তানের তরুণ পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া সাইফ হাসান।

 

পঞ্চম ওভারে ফের বোলিংয়ে এসেই দীর্ঘদিন পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন ওয়াসিম। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন পাকিস্তানের ২০ বছর বয়সী এ তরুণ পেসার।

 

১৫ রানে নাঈম শেখ, সাইফ হাসান ও শান্তর উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

 

৮.৬ ওভারে দলীয় ৪০ রানে আউট হন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাকে সরাসরি বোল্ড করে দেন পাকিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ।

 

শুরুতে নিয়মিত উইকেট পতনের কারণে প্রথম ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪০ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। তবে আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদীর ঝড়ো ইনিংসে শেষ ১০ ওভারে ৮৭ রান যোগ করে বাংলাদেশ।

 

লেগ স্পিনার শাদাব খানের শিকারে পরিনত হওয়ার আগে দলের হয়ে ৩৪ বলে দুই চার ও ২টি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে ফেরেন আফিফ।

 

১৬.৫ ওভারে দলীয় ৯৬ রানে আউট হন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নরুল হাসান সোহান। তার আগে ২২ বলে ২টি ছক্কায় ২৮ রান করেন তিনি। ইনিংসের শেষ দিকে হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান। ২০ বলে এক চার আর ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৩০ রান করেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ি দলের স্কোর ১২৭/৭ করেন পেসার তাসকিন আহমেদ।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ১০ ওভারে ১২৭/৭ রান (আফিফ হোসেন ৩৬, মেহেদি হাসান ৩০, নুরুল হাসান সোহান ২৮; হাসান আলী ৩/২২, মোহাম্মদ ওয়াসিম ২/২৪)।

 

পাকিস্তান: ১৯.২ ওভারে ১৩২/৬ রান (ফখর জামান ৩৪, খুশদিল শাহ ৩৪, শাদাব খান ২১*, মোহাম্মদ নওয়াজ ১৮*; তাসকিন ২/৩১)।

 

ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *