ফাইল ছবি

ডায়াল সিলেট ডেস্ক:থানীয় উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশও ভোটারদের বের করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর ও চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়ায় উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটারদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ দুই উপজেলাতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুলিশও ভোটারদের বের করে দিচ্ছে। এই দুই উপজেলায় ভোটের নামে প্রকাশ্যে ভোট জালিয়াতির উৎসব শুরু হয়েছে।

সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মহেষপুরে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাঠি-সোটা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। একই অবস্থা সাতকানিয়াতেও।

রিজভী বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করলে তারা দেখছি বলে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। যারা ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতের নির্বাচন করে তাদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা অরণ্যেরোদন। নির্বাচন কমিশন সরকারের জাদুর বাক্সে পরিণত হয়েছে। তারা দিনের নির্বাচন রাত্রে করে এবং ভোটার তালিকায় জীবিত মানুষকে মৃত দেখায়। বিগত নির্বাচনগুলোতে যে সমস্ত ভোটাররা জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ভোট দিয়েছে কিন্তু ভোটার তালিকায় এখন তাদের মৃত দেখানো হচ্ছে। এই জাদুকর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের অধীনে নির্বাচনে প্রকৃত ভোটারদের ভোট দেয়ার অধিকার নেই।

ভারতের সঙ্গে চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে সরকার দেশ, মাটি, পানি ও গ্যাস বিক্রি করে; যারা দেশের সার্বভৌমত্বকে অন্যের হাতে তুলে দেয় তারা কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে না। পর দেশের কাছে সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে দালালির পারিশ্রমিক হিসেবে ক্ষমতায় টিকে থাকার গ্যারান্টি পেয়েছে তাদের অধীনে নির্বাচন ভোটার শূন্যই হবে এটাই সাভাবিক।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়া কি সুনীতি? এটাতো এক মহাদুর্নীতি। পুলিশ এবং সরকারদলীয় ক্যাডারদের দিয়ে দিনে-দুপুরে ভোট জালিয়াতি করা মহাদুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ। আর এই মহাদুর্নীতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বুক ফুলিয়ে বিগত ১০/১১ বছর যাবৎ করে আসছেন ক্ষমতাসীনরা। দুই-একজন চুনো পুটিকে ধরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান বলে না বরং এই অভিযানের নামে বড় বড় দুর্নীতিকে আড়াল করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে গত ১০ বছরে যে অসংখ্য দুর্নীতির গুপ্তধন তৈরি হয়েছে সেগুলো উদ্ঘাটন করা দূরে থাক বরং সেগুলোকে পাহারা দেয়া হচ্ছে। সরকারি ব্যাংক, শেয়ারবাজার, পদ্মাসেতুর লুটেরা অধরায় থেকে যাচ্ছে। পর্দা কাণ্ড, বালিশ কাণ্ডের মতো বিস্ময়কর দুর্নীতিগুলো শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ববাসীকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বড় বড় দুর্নীতির মহারথিরা ক্যাবিনেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন। কারণ ক্ষমতাসীনদের কাছে দুর্নীতির রুই-কাতলারা হচ্ছে দেশপ্রেমিক। সুতরাং তাদের কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।

ছাত্ররাজনীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্র শুধু একটি গরুর রচনা মুখস্থ করেছেন কিন্তু পরীক্ষায় এসেছে খেলার মাঠ। তাই ছাত্র খেলার মাঠের মধ্যে গরু ঢুকিয়ে পরীক্ষার খাতায় মুখস্থ করা গরুর রচনাটি লিখে এসেছে। তাই ছাত্ররাজনীতি অপভ্রংশ অপরাজনীতি তথা সন্ত্রাস-দুর্নীতি এবং রক্তপাতের অজুহাতে সমগ্র ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেয়াটা গভীর মাস্টারপ্লানেরই অংশ।

রিজভী বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে যারা কলুষিত করেছে, মারামারি-দলাদলিকে যারা উৎসাহিত করেছে, ক্যাম্পাসে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা বিস্তারে যারা মদদ দিয়েছে তারাই প্রকৃত ছাত্ররাজনীতিকে মানুষের চোখে হেয় করেছে। তারাই এখন সমগ্র ছাত্ররাজনীতিকে বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। ছাত্রসমাজ জনগোষ্ঠীর আলোকিত সম্প্রদায়, তারা আলোকদীপ্ত চোখে রাষ্ট্র ও সমাজে অনাচারগুলো চিহ্নিত করে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যুগে যুগে এই ছাত্রসমাজই অন্যায়-অসাম্য-অবিচারের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে ভাষার অধিকার থেকে শুরু করে স্বাধিকার স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরেছে। এরা নির্যাতিত জনগণের ভ্যানগার্ড হিসেবে রাজপথে দৃপ্তপায়ে এগিয়ে গেছেন।

হলে হলে টর্চার সেল গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, একের পর এক ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ দ্বারা শিক্ষার্থী খুনের ঘটনা ঘটছে। এর ভয়ংকরতম রূপ দৃশ্যমান হল মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। তাকে মারধরের খবর পেয়ে একজন পুলিশ উপ-পরিদর্শক সেখানে ছুটে গেলে ছাত্রলীগের নেতাদের বাধার কারণে সে কিছু করতে পারেনি। ছাত্রলীগকে এই কয়েক বছরে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে তারা কোনো এথিকসের ধারধারেনি। এই কদাচারের জন্য সমগ্র ছাত্রসমাজ বা ছাত্ররাজনীতি দায়ী হতে পারে না।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *