ডায়ালসিলেটে ডেস্ক :: স্বাস্থ্য অধিদফতর চলমান বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করলেও খুলে দেয়া হয়েছে দেশের পোশাক কারখানাগুলো। রোববার (১ আগস্ট) সকাল ৮টার মধ্যে নিজ নিজ কারখানায় যোগ দিয়েছেন অধিকাংশ শ্রমিক। তবে বড় বড় কারখানায় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও কোথাও কোথাও তা ঢিলেঢালা দেখা গেছে। সব তৈরি পোশাক কারখানায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও অধিকাংশ কারখানায় তাপমাত্রা মাপা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সকালে রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় এ কে এম রহমতুল্লাহ গার্মেন্টস, আর টেক্স ফ্যাশন, জান কম্পোজিট ইউনিট লিমিটেড (ইউনিট-২), ড্রেস ফাই নেটওয়ার্ক, ইনজেক্ট ফ্যাশনসহ বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, ৮টার আগেই দলে দলে কাজে যোগ দিচ্ছেন শ্রমিকরা। এদের বেশির ভাগই নারী শ্রমিক। আবার কেউ কেউ নতুন কাজের জন্য ভিড় করছেন। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, হঠাৎ গার্মেন্টস খোলার কথা শুনে অনেক কষ্ট করে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন। আবার কেউ কেউ ঢাকাতেই ছিলেন বলে জানান।

সাতারকুল রোডের এক এম রহমতুল্লাহ গার্মেন্টসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সবার তাপমাত্রা মেপে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। আর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সেখানকার নিরাপত্তারক্ষী মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার জন্য আরেকজন সঙ্গী নিয়ে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, ‘স্যারের (স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ) কঠোর নির্দেশ আছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’

এ বিষয়ে এ কে এম রহমতুল্লাহ বলেন, ‘সাতারকুল রোডের ওই ফ্যাক্টরিতে প্রায় এক হাজার ২০০ জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।’

বাড্ডার আলীর মোড়ের আর টেক্স ফ্যাশনের সুপার ভাইজার মো. মহসিন বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্যাক্টরিতে প্রবেশ করতে দিচ্ছি। তবে আজ মনে হয় সবাই যোগ দিতে পারবে না। কারণ এখনো অনেকে গ্রাম থেকে আসতে পারেনি।’

জান কম্পোজিট ইউনিট লিমিটেড (ইউনিট-২) এর সামনে অনেক নারী-পুরুষের ভিড় দেখা যায়। তবে তাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সেখানকার একজন আমেনা বেগম জানান, তারা নতুন চাকরির জন্য এসেছেন। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকায় গেট থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তবে ওই তৈরি পোশাক কারখানায় সকাল ৮টার আগে থেকেই মেশিন চলছে। তবে ছবি তুলতে চাইলে সুপারভাইজার পরিচয়দানকারী একজন বাধা দেন।

ইনজেক্ট ফ্যাশন কারখানায় ঢোকার সময় কথা হয় রাজিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। হঠাৎ করে কারখানা খোলার ঘোষণায় অনেক কষ্ট করে ঢাকা আসতে হয়েছে।’

অন্যদিকে মফিদুল নামে এক যুবক বলেন, ‘আমি ঢাকাতেই ছিলাম।’

প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের কাজে না ফিরতে অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।

শ্রমিকদের অভয় দিয়ে সংগঠনটি বলছে, বিধিনিষেধ পুরোপুরি শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যোগ না দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি তাদের ফোন করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না। এজন্য শনিবার বিধিনিষেধের নবম দিনে দেখা গেছে রাজধানীর প্রবেশমুখে মানুষের স্রোত। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়ায় তাদের ফিরতে হয়েছে। সাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, হিউম্যান হলার, ট্রাক ও মোটরসাইকেলে করে তারা বাড়ি থেকে আসেন। কিন্তু ঢাকার প্রবেশমুখে পুলিশের বাধায় অনেকে পায়ে হেঁটে ঢাকায় ঢোকেন। ফেরিগুলোতেও ছিল জনস্রোত।

এমন পরিস্থিতি দেখে শনিবার রাতে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, ‘রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের কাজে যোগদানের সুবিধার্থে রোববার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’

ডায়ালসিলেট/এম/এ/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *