ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হওয়ার কারণে ক্যান্সার আক্রান্তের হার বাড়ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে বর্তমানে ২০ লাখের মতো ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষ রয়েছে। প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। এক লাখ মানুষ প্রতি বছর এই রোগে মারা যাচ্ছে। তাই ক্যান্সার কেন হয় এটা আগে আমাদের জানতে হবে, প্রতিরোধ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিটিউড ও হাসপাতালের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত হলে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। তাই প্রথামিক পর্যায়ে যেন ক্যান্সার শনাক্ত হয় সেজন্য ক্যান্সার সেবার পরিধি বাড়নো হচ্ছে। শুধু ঢাকার মানুষ ক্যান্সার চিকিৎসা পাবে এমন না। গ্রামের মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ৮ বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কাজের অনুমোদন দিয়েছেন।
টিকা করোনা আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম হওয়ার কারণ হলো, আমরা একটি বড় জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও কম। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যে সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তৃতীয় ঢেউয়ে সে চিত্র তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, পুরো দেশে এখন এক থেকে দেড় হাজার করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতালগুলোর ৭৫ শতাংশ আইসিইউ বেড খালি রয়েছে। এ সময় তিনি যারা এখনও টিকা নেননি তাদের সবাইকে টিকা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
করোনা থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে ইতোমধ্যে দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এরইমধ্যে ১০ কোটি টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আমাদের টার্গেটিং পিপল ১২ কোটির মধ্যে ৭৫ শতাংশ টিকার আওতায় চলে এসেছে। বাকি লোকদের মধ্যে ভাসমান জনগোষ্ঠী, পরিবহন শ্রমিক তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা ইচ্ছা করেই টিকা নিচ্ছেন না। তবে আমি বলতে চাই, আমাদের দেশের মানুষের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। দেশের জনগণ অন্যান্য দেশের মতো না। ইউরোপে দেখেছি ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে মারধর করা হচ্ছে। নেদারল্যান্ড, আমেরিকাতেও এমন পরিস্থিতির দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশে এখনও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকার হাসপাতালগুলোর উপর চাপ কমাতে স্বাস্থ্যসেবাকে ডি-সেন্ট্রালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটা হলে মানুষের চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসার আর প্রয়োজন হবে না। চিকিৎসা ব্যয়ও অনেক কমে আসবে। এর মাধ্যমে ঢাকার হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমে যাবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমাব হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর প্রমুখ।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *