ডায়াল সিলেট ডেকস
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!চাকুরীতে কোটা বিরোধী আন্দোলন একসময় রুপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। আন্দোলনের সূচনা লগ্নে ছাত্রদের দাবি যদি ওছিল বৈষম্য দূরীকরণ। তবে আন্দোলনে ছাত্রদের প্রাণহানীর ঘটনায় তা পরিণত হয় সরকারের পদত্যাগের দাবিতে। দীর্ঘ একমাসের আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট যখন আওয়ামী সরকারের পতন হয়।
সারাদেশের মানুষ তখন বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয় রাজপথ। এরই মাঝে দেশের বিভি-ন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেও সাথে তখন চলছিল সংঘর্ষ। সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও ছিল একই চিত্র। ওইদিন সিলেটে আন্দোলনে প্রাণ হারান ৮ জন। 1
প্রাণ হারানো ওই ৮ জন হলেন মধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলার মাদ্রাসা ছাত্র পাবেল আহমদ কামরুল, বিয়ানীবাজার উপজেলার ফল ব্যবসায়ী ময়নুল ইসলাম, দোকান কর্মচারী মো. তারেক আহমদ, কলেজ ছাত্র মো. রায়হান উদ্দিন, গোয়াইন উপজেলার সুমন মিয়া, নাহেদুল, সিয়াম আহমদ রাহিম এবং সিলেট নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের ঝালো পাড়ার বাসিন্দা সিএনজি অটো রিকশা চালক পঙ্কজ কুমার কর।
গেল বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনে প্রাণ হারানো ৮জনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় শহীদের মর্যাদা দিয়ে গোলাপগঞ্জের পাবেল আহমদ কামরুল, বিয়ানী বাজারের ময়নুল ইসলাম, মো. তারেক আহমদ এবং রায়হান উদ্দিন সহ এই ৪ জনের গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু একই দিন নিহত হওয়া গোয়াইঘাটের সুমনমিয়া, নাহেদুল, সিয়াম আহমদ রাহিম এবং নগরীর পঙ্কজ কুমার করকে দেওয়া হয়নি শহীদের স্বীকৃতি। যদিও শহীদের
স্বীকৃতি না পাওয়া এই ৪ পরিবারের সদস্যরা জেলাপ্রশাসন সহ বিভিন্ন পর্যায়ে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু ঠিক কী কারনে
তাদের কে শহীদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি তা ছাত্র সমন্বয়ক অথবা জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সুস্পষ্ট ব্যাখা বা কারন জানানো যায়নি।
তাই বছর ঘুরে আবারও আরেকটি বছর এলেও ওই ৪ পরিবারের কষ্ট এখনো দুর হয়নি। স্বজন হারানোর কষ্টের পাশাপাশি স্বজনদের জীবন উৎস্বর্গের স্বীকৃতি না পাওয়ার কষ্ট এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। তাদের স্বীকৃতি কবে পাবেন তারও নেই কোন নিশ্চয়তা।
শাহজাহানের খোঁজ মিলেনি নিখোঁজের ১বছরেও:
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সনকাপন গ্রামের বাসিন্দা আরস আলী। ছেলে শাহজাহান সহ পরিবাওে রয়েছে একাধিক সদস্য। ছেলে মেয়ে নাতীপুতি নিয়ে ভালই চলছিল তাদের পরিবার। জীবিকার তাগিদে কয়েক বছর হল সিলেটে পাড়ি জমিয়েছেন।
>>>>>>
দিন গেলো বছর গেলো কষ্ট রইলো হৃদয় গহীনে
(প্রথম পাতার পর) থেকে এখানেই সব দিক্ষিণ সুরমা উপজেলা ধরণের পুর গ্রামের কাজির মিয়ার কলোনী তে একটি ভাড়া বাসায় তাদেও বসবাস নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার টি সকলের ছোট ছোট সহযোগীতায় চলে যেত ভালো ভাবেই। তাই সবকিছুর পরও সুখে ভরপুর ছিল এই পরিবার টিতে। কিন্তু হঠাৎ করে আসা ঝড়ে সব সুখই যেন লন্ডনও হয়ে গেল। কেননা নিজের তরতাজা ছেলে মো. শাহজাহান মিয়া হঠাৎ করেই যে হারিয়ে গেল পরিবারের মাঝ থেকে। শাহজাহান নিখোজের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও মিলেনি তার কোন
গেল বছরের ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর সারা দেশের মানুষ যখন রাজপথে আনন্দ মিছিল নিয়ে বের হয়। সিলেটেও ছাত্র জনতা রাজপথে বিজয় মিছিল বের করে। বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে একে অন্যকে মিষ্টি মুখ করাতেও দেখা যায় সেদিন। নগরীর দক্ষিন সুরমায় বিজয় মিছিল হয়। ওইদিন ছাত্র-জনতাবিতিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। ওই মিছিলে যোগদেন সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. শাহজাহান জাহান মিয়া। কিন্তু বিজয় মিছিল থেকে তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি শাহজাহান নিখোঁজের আজ ১ বছর পূর্ণ হল কিন্তু এই বছরে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শাহজাহানের পরিবার কে কোন ভাল-মন্দ খবর দিতে পারেনি। সিএনজি
অটোরিকশা চালক শাহজাহানের পরিববারতো জানেই ফিরবে তাদের শাহজাহান। তারা না শাহজাহান কে ফিরে পাচ্ছে পাচ্ছে অবস্থান শাহজাহান নিখোঁজের ১ বছর হলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান খোঁজে বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা পরিবার। যদিও শাহজাহানের পরিবার বারবার অভিযোগ করে আসছিল শাহজাহানকে নক্ষিণ সুরমা থানায় দায়িত্বরত পুলিশ ওইদিন গুলি করে নগুলি করে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। শাহজাহানের বাড় বোন রাজকনা। শাহজাহানের ভিডিও ভাইরাল হওয়া ভিডিও থানা পুলিশ কে দেখিয়েছি তারা আমাদের কথায় গুরুত্ব দিলনা। উল্টো শাহজাহানের অপহরনের কতিপয় লোকজন থানায় মামলা দায়ের করায় শাহজাহানের স্ত্রীর কাছ থেকে স্বাক্ষর । তারা বলেছিল যে শাহজাহান কে খোঁজে পেতে স্বাক্ষর দিতে হবে। তিনি আরে অভিযোগ করেনযে, এই জন্য আমরা কোন হত্যা মামলা দায়ের করতে পারিনি। আমরা সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও দেখেছি। ভিডিওতে পরিষ্কার বুজা যাচ্ছে যে, পুলিশ ওই দিন আমার ভাই কে গুলি করে ফেলে দিয়ে তার গায়ে লাথি মারছে এরবার। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই বলেই তিনি কান্নায় ভেে
পড়েন সুরমা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তী বলেন, শাহজাহান অপহরনের মামলায় পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শাহজাহানেরও কোন সন্ধান এখন পর্যন্ত সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
বানানোর স্বপ্ন ছিলে শহীদ ওয়াসিমের। স্বপ্ন ছিল চাকুরী করে টাকা জমিয়ে নিজেদের জন্য একটি ঘর বানাবেন। তাইতো দিনের পর দিন উপার্জিত টাকার একটা অংশ বোন শিপার কাছে জমাতেন ওয়াসিম। কিন্তু ওয়মিমের সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে রুপান্তির হলো না। গেল বছরের হরের ১৯ ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে শহীদ হোন সিলেটের ছেলে ওয়াসিম।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছিল সারাদেশ। তাদের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন আপামর জনতা। সেদিন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল টলবণে কিশোর থেকে বৃদ্ধরা। মাত্র কয়েকদিনের সংগ্রামে খালি হয় হাজারো মায়ের কুল। নজিরবিহীন এই অন্দোলনে যে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক ছাত্রজনতা। হাজারো জনতার রক্তে রঞ্জিত হয় দেশের রাজপথ। সেদিনের আন্দোলনে রাজধানী ঢাকাতে মৃত্যুবরণ করেন সিলেটের তরুণ ওয়াসিম।
সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের ইন্যতাবাদ গ্রামের কনর মিয়া ও কল্পনা বেগমের সন্তান ছিলেন ওয়াসিম। দুই ভাই বোনের মধ্যে ওয়াসিম ছোট। তার বড় বোন শীপা বেগম থাকেন ঢাকায়।। ওয়াসিমের বয়স যখন ৪ বছর তখন থেকে তিনি বোন বোন জামাইয়ের কাছে বেড়ে ওঠেন।
নিহত ওয়াসিমের বোন জামাই রায়হান জানান, ১৯ জুলাই দিনটি ছিল শুক্রবার। জুমা’র নামাজ পড়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনতে পাই সিলেটি ওয়াসিম গুলি খাইছে। লোকজনের চিৎকার শুনে ওয়াসিমের বোন শীলা ও আমি ছুটে যাই ঘটনাস্থলে। লোকজনের কাছে জানতে পারি, গুলিবিদ্ধদের ছাত্রয়া হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এরমধ্যে একজনের মাথায় গুলি লেগে মগজ বের হয়ে গেছে নিয়ে গেছে। এরমধ্যে এক
ঘটনার দিনের বর্ণণা দিয়ে রায়হান আরো বলেন, সেদিন পুলিশ বিজিবি মাঠে ছিল। পাশাপাশি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি টিয়ারশেল নিক্ষণ হয়। ওয়াসিমকে খোঁজতে যাই তখনও হেলিকপ্টার থেকে টিয়ারশেল ও গুলি চূড়ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে সকল ব্লয়ার্ডে গিয়ে চার পাঁচ বার করে ওয়াসিমকে খোঁজতে থাকি। আমার বিশ্বাস ছিল ওয়াসিম বেঁচে আছে। আমাকে বারবার খোঁজাখোজি করতে
ওয়ার্ডের দায়িত্বরত আনসার ও ওয়ার্ডবয় মর্গে গিয়ে সন্ধান করার পরামর্শ । প্রথমে মর্গের তিন চারটি রুমে গিয়ে খোঁজে পাইনি। প্রতিটি রুমে তখন ১৫ থেকে ২০ টি লাশ ছিল। নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে জানতে পারলাম এ জানতে পারলাম ওই দিনের আন্দোলনে নিহতদেরকে হয়েছে। পাশের আরেক রুমে একজন তার মোবাইল ফোন থেকে কিছু ছবি । তাতে ওয়াসিমের ছবিটি ছিল। ওয়াসিমের লাশ দেখে আমি আর নিজেকে
রায়হান জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তখন লাশের সারি সারি স্তূপ। শত শত লাশ। প্রতিটি লাশ দিয়ে স্বরছিল রক্ত। রক্তে রক্তে ভেসে যায় মর্গ। শোকাহত স্বজনরা খোঁজে বেড়াচ্ছেন হারিয়ে যাওয়া, প্রিয়জনকে। তাদের কল্লায় হাসপাতালের মর্গ এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। কয়েকটি লাশের বুকে ন্যাম কার্ডকুলানো তাতে লেখা ‘অজ্ঞাত। এমনি একটি লাশ দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠেন রায়হ
আহমদ। ই দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও বলেন রায়হান। টানা চার দিন হাসপাতাল পড়েছিল ওয়াসিমের লাশ। লাশ আনতে ছুটতে হয়েছে গুলশান থানা থেকে বাজয়া, থেকে বটিরা এভাবে এক থানা থেকে আরেক থানায় ছুটতে থাকি। কোথাও আইনি এ পাইনি। পরবর্তীতে বাভয়া এলাকার স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনার তিনদিন থানায় জিডি করে লাশ নিয়ে আসি সিলেটে। জুলাই তার গ্রামের বাড়ী ইন্যতাবাদে দাফন করা হয়।
ওয়াসিমের বোন শীলা বেগম বলেন, আমার মা কল্পনা বেগম মারা যাওয়ার পর থেকে ওয়াসিম আমার কাছে। আমার ভাইকে আমি সন্তানের মত বড় করি। সে খুব চঞ্চল ওয়াসিম আমার কাছে। আমার ভাইকে। সন্তানের মত বড় করি। সে খুব চঞ্চল সবার সাথে তার খুব ভাল সম্পর্ক সম্পর্ক ছিল। আমাদের বাবার তেমন কোন জায়গা নাই। তেমন সম্পত্তি না থাকায় ভাই বোন বেশি হওয়ায় একসাথে থাকতে পারতাম । যৌথ পরিবার হলেও আমাদের মধ্যে কখনো কোন মনমালিন্য হয়নি। সবার ইচ্ছে ছিল একসাথে থাকার। যে ঢাকা শহর গিয়ে একমাত্র ভাইকে হারিয়েছে সেখানে
ফিরে যেতে চাইনা ওয়াসিমের বোন শাঁপা বেগম বলেন, ওয়াসিম হত্যাকারিদের সনাক্তকরে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা। পাশাপামি ওয়াসিমের হত্যা মামলায় যেন কোন নিরপরাধরা ভোগান্তির শিকার না হয়। প্রকৃত দোষীরাই যেন শাক্তি পায়।
শহীদ মোস্তাক আহমদঃ বাবা মারা যাওয়ায় বেশিদুর পড়ালেখা করতে পারেন নি। ছোটবয়স থেকেই কর্মজীবন শুরু হয় মোস্তাকের। বাবাহীন মায়ের সংসার সচল রাখতে করে গেছেন বিভিন্ন কাজ। ওয়ার্কশপ মিস্ত্রির কাজ থেকে শুরু করে চালিয়েছেন সিএনজি অটোরিকশা
কোন কাজ করতে কখনো দ্বিদাবোধ করেন নি। যখন হাতের কাছে যা পেয়েছেন তাই করেগেছেন নির্ধিদায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় সকলের যৌথ আয়ে চলতো তাদের সংসার। সকরকারি চাকরীর আশায় এক সময় যোগ দেন পল্লিবিদ্যুতের অফিসে। একজেলা থেকে আরেক জেলায় এজবে অত্যান্ত হয়ে পড়েন কর্মক্ষেত্রে। গেল ছরের জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে নরসিংদী পিডি উবি অফিস থেকে হবিগঞ্জে বদলি হয়ে বসেন। এই বদলি যে মোস্তাকের দুনিয়ার জীবন থেকে বদলি হয়ে পরকালের জীবনে পৌছে দিবে কে জানতো। গেল বছরের ২ আগস্ট হবিগঞ্জ সদরে ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শহীদ হোন মোস্তাক আহমদ। সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার গৌরিপুর এলাকার আবদুল কাদির ও মায়া বেগমের সন্তান মোস্তাক আহমেদ। পেশায় ছিলেন ইলেক্ট্রিশিয়ান। ৭ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। বড় ভাই ময়না মিয়া কাঠমিস্ত্রি ও সুহেল মিয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অপর ভাই মিয়া সিএনজি অটোরিকশা চালক। মোস্তাকের বড় বোন শাহানা,
সবাই বিবাহিত। শুক্রবার। জুমা’র নামায পড়ে মেসে বন্ধুদের সাথে দাওয়া এ বেরিয়ে পড়েন মোস্তাক। শহরের কোর্ট মসজিদ চত্ত্বর ও শহরের প্রান্তে খোয়াই তীরে নূরুল হেরা জামে মসজিদের সামনে বৈষম্যবিরোধী
জনতার ও কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বেলা আড়াইটার দিকে নূরুল হেরা মে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ওইদিন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের বাসার সামনে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায
রবর্তীতে বিকেল সোয়া ৪টায়। এসে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করে। আরা রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে শতাধিক লোক আহত হোন এবং মোস্তাক আহমদ গুলিবিদ্ধ হোন। হবিগঞ্জ সদরের তিনকোণা গুরুদাপার এলাকায় ঘটে বলে প্রত্যেক্ষ দর্শীরা জানান। মোস্তাকের পিঠের ডানদিকে এবং ডান হাতে গুলি লাগে।
আন্দোলনকারীরা মোস্তাককে সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোমিন উদ্দিন চৌধুরী তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ৩ আগষ্ট মোস্তাবেদ মোস্তাকেন
গ্রামের বাড়ী গৌরিপুরে তার দাফন হয়। মোস্তাকের সহকর্মী নূর বক্স বলেন, আমরা কামাল হাজারী ও দিলওয়ার হোসেনের পার্টনার কোম্পানিতে চুক্তিতে কাজে নিয়োজিত ছিলাম। মারা যাওয়ার মাত্র দেড় মাস
আগে মোস্তাক হবিগঞ্জে আসেন। আমরা আটজন একটি মেসে থাকতাম। একসাথে খাওয়া দাওয়া করতাম। ওইদিন জুমা’র নামাজ পড়ে একসাথে খাওয়া দাওয়া করি। কাজ বন্ধ থাকায় যার যার মত করে সবাই বেরিয়ে পড়েন। শুনেছি সে সবার সাথে আন্দোলনে যোগ দেয়। ওই দিন হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে মোস্তাককে মৃত পাই।
মোস্তাকের মা মায়া বেগম বলেন, ‘আম্মা নামায পড়িয়া তোমার লগে লাগে নিরিবিলি মাতমু নে’। এভাবেই ছিল মায়ের সঙ্গে তার শেষ কথোপকথন। আমি শুনেছি একটা গুলি লাগার পর আমার ছেলে ওঠে দাড়িয়েছিল। তখন তাকে লক্ষ করে আরেকটি গুলি ছোড়ে। আর আমার ছেলে উঠে দাঁড়াতে পারেনি। আমার আমার ‘বাইাহ্য’ হত্যার বিচার চাই
গৌছের নামে সড়কের নামকরণ দাবি
২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদরে পুলিশ-বিজিবিরসঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে নিহত হন গৌছ উদ্দিন লার উত্তর ঘোষগাঁও এ ঘোষগাঁও এলাকার মৃত মোবারক আলী ও লেবু বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি গোলাপগঞ্জ সিএনজি অটোরিকশা রেজিঃ নং-২০৯৭এর কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।
গৌছের স্মৃতি রোমন্থন করে ভাই আবুল কালাম বলেন, সারাদেশে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের রের নিপীড়নের প্রতিবাদে গোলাপগঞ্জেও সোচ্চার ছিল ছাত্র-জনতা।ঘটনার দিন ৪ আগষ্ট উপজেলার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে হাজারো জনতার ঢল নামে। মাইকে ঘোষণা করা হয় ছাত্রছাত্রীদের সেভ করতে। বাড়িতে দুপুরের খাবার সময় মাইকিং শুনতে পেরে গৌছ হকিং শুনতে পেরে গৌছ ঘটনাস্থলে এসে ভাগ্নে-ভাগ্নিকে নিরাপদে সরিয়ে আন্দোলনে এসে যোগ দেন। ওই আন্দোলনে নিজেও আবুল নিরাপদে সরিয়ে আন্দোলনে এসে ভাগ্নে-ভাগ্নিকে তিনি বলেন, দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ-বিজিবি। এতে অনেকে হতাহত হন। গুরুতর আহত পৌছকে প্রথমে চাচাতো ভাইসহ কয়েকজন নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় চলমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা গৌছকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই আন্দোলনে গৌছ ছাড়াও উপজেলার আরো ৫ জন গুলিতে প্রাণ হারান চারভাই ও এক বোনের মধ্যে গৌছ ছিলেন তৃতীয়। গৌছ ছিলেন তৃতীয়। বোনের বিয়ে হয়েছে। বড় ভাই সেলিম উদ্দিন মারা গেছেন অনেক আগে। গৌছের আরেক বড় ভাই আবুল কালাম সিএনজিও অটোরিকশা চালক। এদিকে গৌছ হত্যার ঘটনায় ২৩ আগষ্ট গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা(নং-৮(৮)২৪) হয়। মামলার বাদি রেজাউল করিম বলেন, চাচা গৌছ উদ্দিনের মৃত্যুর কয়েকদিন পর কিছু ব্যক্তি আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নেয়। তার কয়েকদিন পর জানতে পারেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার বাদি তিনি। বিষয়টি অবগত হওয়ার সাথে সাথে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয়। সামাজাক
ফাউন্ডেশনের ৫ লাখ টাকা, জামায়াত-বিএনপি থেকেও টাকা দেওয়া হয়েছে, তবে
সঞ্চয়পত্রের টাকা পাইনি পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ কত ভারি। ‘
না। পি ছেলেকে হাফিজ বানিয়েছিলাম, আমার জানাযা পড়বে বলে ।কিন্তু সে আশা পূরণ হলো না।’ পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কতো ভারি, তা আমার মতো সন্তানহারা বাবা ছাড়া
অলিতে নিহত শহীদ ক্বারী মো. কামরুল ইসলাম পাবেলের বাবা রফিক উদ্দিন ছেলের কেউ অনুমান করতে পারবে না। ছাত্র-জনতারআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের স্মৃতি আত্ততাতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
নিহত পাবেল শহীদ ঝারী মো. কামরুল ইসলাম পাবেল সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের কানিশাইল গ্রামের রফিক উদ্দিন ও দিলারা বেগম দম্পতির ছেলে
শ্যামল সিলেটের সাথে আলাপচারিতায় রফিক উদ্দিন বলেন, ‘আমার ও ছেলের মধ্যে ৩য় ছেলে সলেটের কামরুল। সাথে তাকে তাতে হাফিজি শিক্ষা দিয়েছিলাম এ এ জন্যই জনাই যে, যে, ‘মারা গেলে যাতে জানাযা পড়ায়।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সিলেট নগরী কোতোয়ালি মডেল থানা সংলগ্ন খড়ি ঘরের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় দ্বারী মো. কামরুল ইসলাম পাবেল। ওইদিন বিকেলে একটি ফোন আসে আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এরপর আরেক আসে আমার ছেলে নাই। পুলিশের গুলিতে আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। কিন্তু পর্যন্ত মামলার কোনো আসামি ধরা খাইছে কিনা জানিনা। রাষ্ট্র পরিচালনাকারিদের আসামিদের চিহ্নিত করে বিচার করার দাবি জানান তিনি
শহীদ কামরুলের মা দিলারা বেগম বলেন, ছেলে আমার ডায়েরি লিখতো। মারা যাওয়ার লিখে গেছে-‘আমার জীবনের ঘটনা, আমার জীবনে যা ঘটেছে, তা আমার জীবনকে আলোকিত করেছে। সে প্রায়ই বলতো, ‘আম্মা আমি তোমারে ফালাইয়া কোনোখানো যাইতাম নায়।’ আমি চাই আমার কোরআনের হাফেজ ছেলেকে যারা গুল্লিখরি মারছইন, তাদের শাস্তি হউক।
পাবেল নিহতের ঘটনায় ২২ আগস্ট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পাবেলের বড় ভাই পিপলু বাদী হয়ে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি মামলা (সিজার-৯৮২/২৪) দায়ের করেন। এই মামলায় কোতোয়ালী মডেল থানায় পরিবা বানায় কর্মরত ৪৫জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে পরিবারের সদস্যরা জানান, পাবেল পাবেল শহীদ হওয়ার হওয়ার এসপি, ইউএনও ছাড়াও অনেক
রাজনৈতিক নেতারা বাড়িতে ঘুরে যান। এ পর্যন্ত জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫লাখ টাকা, সরকারি সঞ্চয়পত্রের লাখ ও জেলা পরিষদ থেকেও অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। স্বপ্ন অধরা থেকে গেলো শহীদ সুহেলের
ভাঙা ঘরের সামনে পড়ে থাকা ইটে শেওলা ধরেছে। ইটগুলো দিয়ে বাবা-মায়েরজন্য ঘর তৈরী করতে চেয়েছিলেন সুয়েল আহমদ (২১)।
উপজেলার সিমরাইল প্রিয়ম নিবাসে আগুন দেওয়া হয়। যেখানে কাজ শেষে গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার সিমরাইল ‘প্রিয়ম নিবাসে আগুন দেওয়া হয়। যেখানে কাজ শেষে বিশ্রামে ছিলেন অশ্রামে ছিলেন সুহেল আহমদসহ ১৪ শ্রমিক। তাদের ১১ জন বেরোতে পারলেও জীবস্ত ঋদ্ধ হন সুহেলসহ তিনজন। বিয়ানীবাজার উপজেলায় চারখাই ইউনিয়নের কাকুরা গ্রামের বাসিন্দা তখলিছুর রহমান ও পারভিন বেগম দম্পতির ছেলে ছেলে সুহেল আহমদ (২১)।
সাত ভাইবোনের মধ্যে সুহেল ছিলেন সবার বড়। তার ছোট বোন ফরিদার বিয়ে হয়েছে কিছু দিন আগে। আরও দুই বোন আবিদা নবম শ্রেণী ও মুনতাহা দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়েন। সুহেলের বাবা-মাবলেন, ‘আমরার লাগি এখটা নয়া ঘর বানানোর খেয়াল (স্বপ্ন) ছিল আমার বাছাধনের। এর লাগি আয়রোজগারের টে টেখা (টাকা) ) দিয়া দিয়া কিছু (কিনে) রাখে। কিন্তু ভার সেই স্বপ্ন আর ফুরা অইলো না। এখন ইট দেকিয়া ছেলের খতা (কতা) মনো অইলে কইজা ফাটি যায়। আগুনে পুড়া আমার পোয়ার মুখর দেখতে পারলাম না
ছেলের কথা বলতে গিয়ে সুহেলের মা পারভীন বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। চোখে অঞ্চ আর বুকভরা কষ্ট নিয়ে সুহেলকে শেষ বারের মত দেখতে না পারার আক্ষেপ পুড়ায় তাঁকে
জানা গেছে, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ টাকা ও সরকার থেকে সঞ্চয়পত্রের ১০ লাখ টাকা টাকা পেয়েছে পেয়েছে সুহেলের পরিবার। এছাড়া জেলা পরিষদ থেকে আরও ২ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে পেয়েছেন বলেও জানান তারা। মাথায় ও পায়ে গুলি করে হত্যা করা হয় তারেককে বিয়ানীবাজার নিদনপুর গ্রামের মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ। বাড়িতে গিয়ে জানা গেলো, ওই বাড়িটি তারেকদের নিজের নয়, তাদের বাড়ি নেই। রফিক উদ্দিনের মৃত্যুর পর আগের বাড়িটি ছেড়ে দিতে হয়। মা-ভাই-বোনেকাচার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ধরে আশ্রিত ছিলেন তারেক কর্দমাক্ত মেঠোপথ। কাদা মাড়িয়ে যেতে হয় অন্তত আধা কিলোমিটার পর শহীদ তারেক আহমদের বাড়ি। হাওর মেমা হওয়ায় গ্রামের গ্রামের রাজ রাস্তাঘাট এখনো কাঁচা। তবে তারেকের হীরাত বীরত্বে প্যারা পুরো গ্রাম যেনো নতুনভাবে পরিচিতি পেয়েছে। এ জন্য তাকে নিয়ে গর্ব গ্রামবাসীরও। কিন্তু বদলায়নি কাঁচা সড়কটি। যদিও বাড়িটিতে পা পড়েছে প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদেরও।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিল তারেক। গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনে যায়। এরপর দুপুরে বিয়ানীবাজারে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ছাত্রজনতার। ওই সময় পুলিশ তারেককে ধরে খানা কম্পাউন্ডে নিয়ে যায়।
শহীদ তারেকের মা, ভাই-বোনেরা বলেন, তার স্ত্রী সামিয়ার বাড়ি কুমিল্লা জেলাম। স্বামীকে হারানোর ৪০ দিন পর সন্তানসহ সামিয়াকে পিত্রালয়ে নিয়ে যান তার মা। সরকার সরকার থেকে থেকে প্রাপ্ত প্রাপ্ত জায়ান ভাতার ৮০ ভাগই যায় স্ত্রীর কাছে। যে স্ত্রী স্বামীর ৪০ দিন পার হতেই চলে যান, আক্ষেপ করে বলেন ইনারুন বেগম।
তারেকের বড় ভাই লায়েক বলেন, ৫ আগষ্ট বিয়ানীবাজার পৌর শহরে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংযর্থ হয়। তার ভাই তারেকও আন্দেলনে সক্রিয় ছিলেন। পরিচিত কয়েকজনের বরাতে তিনি জানতে পারেন-ওইদিনদুপুরের কোন এক সময় পুলিশ তার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ আর আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে রায়হান ও ময়নুল নামের দুজন মারা যাবার খবর সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই সংবাদে তাদের মনে অজানা আতংক আতংক দেখা দেয়। পরিবারের সবাই তারেকের জন্য
উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বলেন, রাতের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারেকের খোঁজে আত্মীয়-স্বজন বেরিয়ে পড়েন। অনেক জায়গায় মৌজাখুজির পর ৬ আগষ্ট ভোরে বিয়ানীবাজার দেয়ালের কাছে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তারেকের লাশ পাওয় যায়। তারেকের কপালে একটি এবং দুই পায়ে গুলির চিহ্ন ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আকে মৃত ঘোষনা করেন
বছর পেরোলেও মামলা গতি নিয়ে হতাশ পরিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনে সিলেটে প্রথম শহীদ হন শাবিপ্রবির। ছাত্র রুদ্র সেন। গত বছর ১৮ জুলাই পুলিশ জাঁকে ধাওয়া করে একটি খালের পানিতে ফেললে সাঁতার না জানায় বন্দ্র ডুবে মারা যান। সেই সঙ্গে একটি পরিবারের সকল স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায়।
দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার সুবীর সেন ও শিখা বণিকের দম্পতির ছেলে রুদ্র সেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই ভাইবোনের মধ্যে রুদ্র ছোট। তাঁর বড় বোন সুস্মিতা সেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
শহীদ রুদ্র ফিরে পাবো না। তবে রুদ্র যে কারনে জীবন দিয়েছে, তা যদি বাস্তবায়ন হয়, তবেই তার আত্মা শান্তি পাবে রুদ্র সেনের বোন সুস্মিতা সেন বলেন, “আমার ছোট ভাই রন্দ্র দেশের জন্য রুদ্র সেনের মৃত্যুর ঘটনায় বাদী হয়ে শাবি শিক্ষার্থী মো. হাফিজুল ইসলাম মামলা দায়ের করেন মামলার এজাহারে বলা হয়েছে-পুলিশ, ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে রুদ্র সেনকে খাওয়া
দিয়ে পানিতে ফেলে হত্যা নিশ্চিত করে। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে আছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক মো. এমরান হোসেন বলেন, কন্দ্র সেন হত্যা মামলাটি আমরা যথাযত প্রত্রিনা অনুসরণ করছি। এজাহারে বেশির ভাগ আসামির নাম ঠিকানা নেই। এছাড়া ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের ভিসেরা রিপোর্ট আসলেও সেখানে মন্তব্য করা হয়নি। যে কারনে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করাই মামলা বিলম্বের কারণ।
ছেলের মৃত্যুর সনদ এখনো পাইনি।
২০২৪ সালে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের অন্যতম রায়হান উদ্দিন। ২০২৪ সালে এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলেন রায়হান উদ্দিন (২১)। বিয়ানীবাজার পৌর এলাকায় ছিলো তার একটি চায়ের দোকান। চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় রায়হান দেন। গত ৪ আগস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হন রায়হান। গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেল ৫টায় বিয়ানীবাজার থানার সামনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় রায়হান। সেদিন তার ছেলেসহ আরো ২ জন নিহত হন। মধ্যে দ্বিতীয় রায়হান।
জুলাই আগস্টে ছাত্রদের ডাকে আন্দোলনে যোগ
কারণে সবাই একটু আকটু ঘ তিনি বলেন, ছেলের কারণে সবাই একটু-আদটু খবরা রাখছেন। সরকারি-বেসরকারি । সহায়তা সহায়তা হিসেবে হিসেে জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ টাকা, জেলা পরিষদ থেকে জামায়াত ৩ লাখ, বিএনশি থেকেও সামান্য অর্থ সহায়তা পেয়েছি অন্যের বাড়িতে থাকেন শহীদ ময়নুলের স্ত্রী-সন্তান ছেলে আমার কোনো রাজনীতি করতো না জানিয়ে রায়হানের বাবা বলেন, সে বিএনসিসি’র এক্স ক্যাডেট ছিল। পাশাপাশি আনসারের ট্রেনিং নিয়েছে। পড়ালেখার পাশাপাশি কম্পিউটার শিখেছে
দেশের জন্য জীবন বিসর্জন করলেও স্ত্রী-সন্তান হয়েছেন অসহায় শহীদ ময়নুল ইসলামের। কিশোরী মেয়ে ও শিশু সন্তানকে নিয়ে অন্যের জায়গায় আশ্রিত হয়ে দিনাতিপাত করছেন এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো শহীদ ময়নুল ইসলাম (৩৫)।
বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার পূর্ব নয়ল্লাদের আরেকজনের জায়গায় টিনের ছাপড়া ঘরে বসতি তাঁদের। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা দর। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ময়নুল ইসলাম। তার বাবা বিয়ানীবাজার একটি স্কুলের নৈশ প্রহরী ছিলেন। সে সুবাদে বিয়ানীবাজারেই বেড়ে ওঠা ও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার মেয়ে পূর্ব নয়াগ্রাম তফজ্জুল বশির উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী এবং ছেলে শিহাব ইসলাম স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেনীর ছাত্র।
ঘটনার দিনের (২০২৪ সালের ৪ জুলাই) স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ ময়নুলের স্ত্রী শিরিন বেগম ও কিশোরী কন্যা ফাতিমা আক্তার।

