ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। এছাড়া অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টি। এতে নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার তিনটি গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৪৫ হেক্টর ফসলি জমি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এসব তথ্য জানা গেছ।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টায় পরিমাপ করা তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টে পদ্মার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও অতিবৃষ্টিতে ১ হাজার ৪৫ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এতে নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন, রোপা আউশ, আগাম সবজি, আখ, বীজতলা ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসল।

এছাড়া পদ্মার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভ্যন্তরীণ গড়াই, হড়াই, চন্দনা ও চিত্রা নদীর পানিও বাড়ছে। পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর, বরাট, খানগঞ্জ, পাংশা উপজেলার হাবাসপুর, বাহাদুরপুর, সেনগ্রাম, কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর, রতনদিয়া, হরিণাবাড়িয়ার চর, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, শিশু খাদ্য, ওষুধসহ গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সারাদিন পানির মধ্যে অবস্থান করায় ঘা-পাঁচড়া দেখা দিতে শুরু হয়েছে। টয়লেট তলিয়ে যাওয়ায় নারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অন্যদিকে জেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সদরের গোদারবাজার, চর সেলিমপুর, গোয়ালন্দের দেবগ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিলীন হচ্ছে মসজিদ, বসতভিটাসহ জনপদ। সব মিলে বন্যা ও ভাঙন কবলিতরা চরম সংকটে দিন পার করছেন। সরকার থেকে মাত্র ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে নগণ্য।

কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আতিউর রহমান নবাব জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। তালিকা করে তাদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।

দেবগ্রাম ইউনিয়নের চরবরাটের বাসিন্দা সোহোল মিয়া জানান, তার গ্রামের ২০০ বাড়ি এখন পানি নিচে। রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় সময়মতো রান্না না করায় খেয়ে না খেয়ে দিনপার করছে অনেকে। শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক জানান, জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি উপজেলায় ২১৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে চাহিদা পেলে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ডায়ালসিলেট/এম/এ/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *