ডায়ালসিলেট ডেস্ক::বিদেশে ব্যাংক ঋণের সুদ হার অনেক কম। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো কম সুদ হার নিয়েই ব্যবসা করছে। এতে তাদের পণ্য উৎপাদন ও পরিচালনা ব্যয় আমাদের চেয়ে কম। তারা আমাদের তুলনায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে বেশি। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশ ও আমানতের সুদ ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি এখন বাস্তবমুখী হয়েছে। বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের সুদ হার বেশি। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন এটি বলেছেন। আমি মনে করি, এটা বাস্তবধর্মী হওয়া উচিত, সেটি হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী ব্যাংক ঋণের সুদ প্রসঙ্গে বলেন, শুরুতে এই সুদ হার নিয়ে নানা শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংকের ক্ষয়-ক্ষতি বাড়বে, আর্থিক অবস্থা ভালো যাবে না- এমন শঙ্কা ছিল ব্যাংকগুলোর। এগুলো বাস্তব হয়নি। বর্তমান ব্যাংক সেক্টর ভালো অবস্থানে আসছে। আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সরকার থেকে টাকা নিয়ে রিফাইন্যান্সিং করে চলত। গত দু-তিন বছর থেকে কাজটি আর নেই, পরিবর্তন হয়েছে। এখন রিফান্ডিং করার কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারি ব্যাংকগুলোকে সুস্পষ্টভাবে আমরা বলে দিয়েছি আপনাদের অর্থ অর্জন করতে হবে। আয় করতে হবে, আয় করে ব্যয় করতে হবে। সেটিও তারা করে যাচ্ছে। সুতরাং সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক সবাই একটু ভালো অবস্থানে আছে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশের মতো ইনফ্লেশন রেট খুব কম দেশে পাওয়া যাবে। বিশ্বের কোথাও কোনো ব্যাংকে টাকা রাখলে সুদ পাওয়া যায় না। উলটো টাকা রাখলে ব্যাংককে সুদ দিতে হয়। আমাদের দেশের লোকজন যারা বিদেশে আছেন তারা অফিসিয়াল ব্যবসা করলে বিদেশে টাকা রেখে কিছু পান না। তাদের টাকাও এখন দেশে নিয়ে আসেন। এখানে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন। পুঁজি বাজার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি যখন ভালো হবে, পুঁজিবাজারও তখন চাঙ্গা থাকবে। বর্তমান বাজার বেশ ভালো ভালো উচ্চতায় গেছে, যেসব কোম্পানির উৎপাদন নেই তাদের মূল্য অনেক উপরে উঠে যাচ্ছে- বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন এটি দেখবেন। তবে পুঁজিবাজারের যে বেসিক বিষয় সেটি হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতি যখন ভালো হবে, পুঁজিবাজারের অবস্থাও চাঙ্গা থাকবে। বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন। অনুমোদিত প্রস্তাবের মধ্যে এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের প্যাকেজ ডব্লিউডি-১৪ এর পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। টিইসি ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২৫২ কোটি টাকা। এছাড়া কুমিল্লা পুলিশ লাইনস্ এলাকায় ১৫তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজের দর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ইবতেদায়ি, মাধ্যমিক, দাখিল এবং কারিগরি (ট্রেড) স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের দরপ্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের আওতায় যথাসময়ে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ইবতেদায়ি (১ম ও ২য় শ্রেণি), মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি, দাখিল স্তরের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি এবং কারিগরি (ট্রেড) স্তরের ১ কোটি ৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৪০ কপি বই সংগ্রহ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২৫ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার ২১৯ টাকা।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *