মনজু বিজয় চৌধুরী : রমজান মাসে বাজারে লেবুর চাহিদা বেশি থাকায় আড়তে লেবুর দাম আকাশ ছোঁয়া। রমজান মাসে সেই চাহিদা আরও বেড়ে যায়। কারণ ইফতারে লেবুর শরবত ছাড়া চলেই না। আর এই চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে দামও। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
মৌলভীবাজারের প্রধান অর্থকরী ফসল চা হলেও অপার সম্ভাবনাময় ফসল হচ্ছে লেবু। যাহা দেশের ৮০ভাগ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে লেবুর ভূমিকাও আজ অসামান্য। আবহাওয়া অনুকূলে,উর্বরমাটি ও চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে মৌলভীবাজারে লেবুর বাস্পার ফলন কৃষকরা যুগ যুগ বছর দরে একটি হিমাগারের দাবীতে বিগত ২০২১সালে হিমাগার স্থাপনের জন্য কৃষি মন্ত্রনালয়ের একটি প্রকল্প আসে। কিন্তুু স্থানীয় কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় ভুমি একোয়ার করতে না পারায় সেটি ফেরত চলে যায়। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মাজে ক্ষোভ প্রকাশ পায়। লেবু সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করনে হিমাগার স্থাপনসহ সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদান করলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দাম ও চাহিদা ভাল থাকায় এখন অনেকেই বাণিজ্যিক ভাবে লেবু চাষে ঝুকছেন। ইতোমধ্যেই অনেকেই পেয়েছেন কাক্সিক্ষত সাফল্য। সবুজ চা বাগান বেষ্টিত উচুঁ নিচু পাহাড়ি টিলায় ঘেরা মৌলভীবাজার জেলা। রয়েছে টিলায় সারিসারি লেবু বাগান। পাহাড়ি টিলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়েছে কাগজি, চায়না,জারা,পাতি ও কাটা লেবু সহ আর বিভিন্ন জাতের লেবু। শুকনো মৌসুমে পানির ব্যবস্থা না থাকায় ফলনে বাধা সৃষ্টি হয়। ধণ্যঢ্য ব্যক্তি মালিকানায় কিছু টিউভওয়েল ব্যবস্থা করলেও সাধারন ছোট ছোট বাগান মালিকরা পানি ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বাপ্পার লেবু ফললে সু স্বাধু এই ফসল চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। লেচু চাষীরা সহজ শর্তে ব্যাংক লোন ও সরকারী পৃষ্ট পোষকতা পেলে সফলতার পাশাপাশি সরকারের বিপুল আয়ের সম্বাবনা রয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসকে তেদ্র কওে বড় অংকের আয়ের হাতচানী আসে কৃষক ও ব্যাবসায়ীদের মাজে। লেবু চাষ একদিকে স্থানীয় চাহিদা সিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে রাজস্ব আয় অন্যদিকে বেকারত্ব দুরীকরনে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
কয়েকজন বক্সপপ লেবু বাগানে শ্রমিকরা জানান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে সবচেয়ে বেশি লেবু চাষ হয়। সম্ভবত দেশের সবচেয়ে বড় লেবুর আড়ত শ্রীমঙ্গলে। তবে এবার রমজান মাস শুরুর পর থেকে আড়তে লেবুর দাম অনেক বেড়ে গেছে। মাঝারি সাইজের প্রতি হালি লেবু ঢাকার পাইকাররা ৫৫-৬০ টাকা দরে শ্রীমঙ্গল থেকে কিনে নিয়ে বিভিন্ন বাজারের সরবরাহ করছে। সেখানে কত বিক্রি হয় আমাদের জানা নেই। অসচ্চল লেবু চাষীদের কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সহজ শর্তে লোন ও হিমাগার স্থাপনে এগ্রিয়ে আসার দাবী সরকারের কাছে।
লেবু বাগানের মালিক বলেন, কৃষি বিভাগের উদাসীরতায় ভুমি একোয়ার যথা সময়ে না করায় ফেরৎ যায় প্রকল্পটি। ফলে কৃষকদের ভাগ্যে জুটেনি হিমাগর। কৃষি ভিাগের অসহযোগিতায় লেবুর বাম্পার ফলনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।কাজেই পুর্নরায় হিমাগার স্থাপনে সরকারের দৃষ্টি চান তারা।
লেবু ব্যবসায়ীরা জানান- রমজান মাসে লেবুর প্রচুর চাহিদা বাড়ায় ও হিমাগর না থাকায় সংরক্ষন করতে না পেরে নায্য দাম পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্খ কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। রমজানের পূর্বে বা রমজানের মধ্যে লেবুর দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোজার পরে দাম কমতে পারে বলেও জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গল লেবু ব্যবসায়ী সমিতি, সভাপতি আনোয়ার মিয়া বলেন এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত করোনা মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উটতে লেবু চাষী ও ব্যবসায়ীরা আশার আলো দেখছেন। পাশাপাশি কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে হিমাগার স্থাপনের জোর দাবী জানাই।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সামচ্ছুদিন আহমদ জানান লেবুর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দশে করোনার প্রাদুর্ভাব থাকায় লেবুর চাহিদা ছিল প্রচুর। ব্যবসায়ীরা যুগ যুগ বছর হিমাগারের দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার কৃষি মন্ত্রনালয় থেকে ২০১১সালে হিমাগার স্থাপনের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তুু ভুমি একুয়ার করতে না পারায় সেটি বিফলে যায়। মৌলভীবাজারের লেবু চাষে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব আয়ের এই উৎসকে সহযোগীতার আহবান।

