ডায়ালসিলেট ডেস্ক:  মৌলভীবাজারে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন চলছে লক্ষাধিক টাকার ঘোষ বানিজ্য। বিশেষ মার্কা চিহ্নে ও সিন্ডিকেট চক্রের হাতে জিম্মি সাধারন পাসপোর্ট গ্রহিতারা।ফলে অনেক প্রবাসী হচ্ছেন ব্ল্যকমেইলের শিকার। মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দূর্নীতির দায় কাটাতে পাঠানো হয় উপ-পরিচালক পদধারী মানিক চন্দ্র দেবনাথ নামে একজনকে। তিনি এসে অফিসটি নিজের মতো করে সাজান। পুর্বের কর্মচারী অনেককে রদবদল করেনও নেন তিনি। অফিস রুমও নিজের মতো করে সাজিয়ে নেন।সাধারন প্রতিটি পাসপোর্টের জন্য অফিসে বিশেষ মার্কা চিহ্নের চার্জ দিতে হয় ১৬ শত টাকা। এছাড়াও অফিসিয়াল গোপন তথ্যসহ পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য অফিস কর্মচারীর যোগসাজসে বাহিরেও প্রচার হচ্ছে।অফিসের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করে দেন হিমেল নামের এক কর্মচারীকে। মৌলভীবাজারে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের তথ্য মতে জেলার সাত উপজেলা থেকে দৈনিক প্রায় ২ শতাধিক ব্যক্তি পাসপোর্ট করতে অফিসে আসেন। কিছু পাসপোর্ট গ্রাহক আসেন ট্রেভেলস এজেন্সির মাধ্যমে। আবার সরাসরি অফিসে পাসপোর্ট করতে এসে কিছু লোক পড়েন সিন্ডিকেটের হাতে। আর কিছু ব্যাক্তি সরাসরি অনলাইনে আবেদন করে পাসপোর্টের ফরম জমা করার চেষ্টা করেন।তার চেয়ার টেবিল ছাড়া বসারও কোন ব্যবস্থা রুমে ঢুকলে দাড়িয়ে নিতে হয় সেবা। সাথে সাথে বিশেষ মার্কা চিহ্ন, ও সিন্ডিকেট চক্রের আনেন আমুল পরিবর্তন। পূর্বের মতো করে জনা চালিয়ে হিমেল নামের তার এক বিশ্বস্ত কর্মচাতরীর মাধ্যমে নতুন পদ্ধতিতে মার্কা চিহ্ন চালু করেছেন। দালাল ও সিন্ডকেট চক্র এটিকে বলে ডিজিটাল মার্কা চিহ্ন। সাধারন পাসপোর্ট গ্রহীতার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার সাথে দেখা করা বন্ধ করে দেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

যারা এজেন্সি বা সিন্ডিকেটের মাধমে জমা করতে যান তারা কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই ফরম জমা করে ফিংগার ফ্রিন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে পারেন। এর বিনিময়ে সিন্ডিকেট বা এজেন্সির নিকট গুনতে হয় পাসপোর্টের নির্দিষ্ট ফ্রি ছাড়াও অতিরিক্ত ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। মার্কা চিহ্ন ছাড়া যদি কোন ব্যাক্তি পাসপোর্ট করতে আসেন তার আবেদনে নানা কারন দেখিয়ে ফেরৎ করা হয়। বিবাহিত পুরুষ বা মহিলাকে বিয়ের কাবিন নামা প্রদর্শন করতে হয়।

এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে ফেরৎ করা হয়। ওই ব্যাক্তি নির্বাচন অফিস থেকে এন আইডির ভেরিফাই কপি সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার পরও পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ফেরৎ করা হয়। আবার ওই আবেদন মার্কা চিহ্নের মাধ্যমে গেলে সাথে সাথে ফ্রিংগার প্রিন্ট নেওয়া হয়। মানুষের গুরুত্বপূর্ন পাসপোর্টের গোপন তথ্য একটি সিন্ডিকেট চক্রের নিকট দেওয়া হয়।

এই সিন্ডিকেট চক্র বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যকমেইল করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এই সব কাজ নিয়ন্ত্রন করে অফিসের হিমেল নামক কর্মচারী। পাসপোর্টের নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি ভুল সংশোধন করতে আবেদন করতে গেলে ভুলের ধরন অনুযায়ী ২০ হাজার থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত চুক্তি করতে হয় হিমেল নামের কর্মচারীর নিকট। নতুবা আবেদনই গ্রহন করা হয় না।

মামলা রেখেও পুলিশ ভেরিফিকেশন পেতে কোন সমস্যা হয় না হিমেলের সাথে চুক্তি থাকলে এরকম বহু পাসপোর্ট গ্রহিতার নিকট জানা গেছে।সব কিছু মনিটরিং করেন উপ-পরিচালক মানিক চন্দ্র দেবনাথ। হিমেলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সবাইকে চলতে হয়। ঘুষ বানিজ্যের টাকা গুলো অনেকে পেয়ে থাকেন।

কিছু করার নেই। বিষয়টি ওপেন সিক্রট। কারও অজানা নেই। বহু দুর দুরান্ত থেকে আগত অনেক মানুষ বউ বাচ্চা সহ পাসপোর্ট করতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মানিক চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এই চেয়ারে যে বসবে সে বুঝতে পারবে চেয়ারটি কেমন! যারা সমালোচনা করে তারা এসে এই চেয়ারে বসতে বলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *