মৌলভীবাজারে পুলিশের আটকের পর জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান বলে দাবি করেছে পুলিশ।শনিবার রাতে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!এর আগে শনিবার বিকেল ৫ টা ১০ মিনিটে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা থেকে তাঁকে আটক করেন মৌলভীবাজার মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাকির আহমদ।
জসিম উদ্দিন মৌলভীবাজার শহরের বেরিরচর এলাকায় বসবাস করেন। তাঁর স্থানীয় ঠিকানা হবিগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি মোবাইল চুরির জিডির প্রেক্ষিতে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে জসিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় জসিমের বুকে ব্যথা উঠলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তাঁকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ দাবি করে।
জসিমকে আটক করা এএসআই শাকির আহমদ রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে মৌলভীবাজার চৌমুহনী থেকে মোবাইল চুরির জিডির প্রেক্ষিতে জসিমকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মোবাইল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে সুফিয়ান ও মারুফ নামে আরও দুজনকে আটকের জন্য বের হই। এরপর সন্ধ্যার দিকে আমার কাছে খবর আসে আসামি জসিম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
জসিমের বাবা আরজু মিয়া বলেন, ‘শুনেছি আমার ছেলেকে ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর আমি ছেলের স্ত্রীকে থানায় পাঠাই। থানায় যাওয়ার পর তার মোবাইল বন্ধ পাই। পরবর্তীতে আমরা হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলের লাশ পড়ে আছে।’
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিনেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে ইসিজি করান। ইসিজি রিপোর্ট আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। আমাদের আরএমও মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন।’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, ‘জসিমের শরীরে আঘাত জনিত বা অন্য কিছু পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে তিনি হার্টঅ্যাটাক জনিত কারণে মারা গেছেন।’
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘জসিম নামের একজন মারা গেছেন। তিনি আগে থেকেই হার্টের রোগী ছিলেন, সেটা আমাদের জানা ছিল না। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন তো দূরের কথা উনাকে ধমকও দেওয়া হয়নি। স্বাভাবিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে উনাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ঘণ্টা দু-এক পর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং তিনি মারা যান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়। ময়নাতদন্তও করা হয়েছে। পরিবার কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি। মরদেহ হস্তান্তরের পর দাফন করেছে পরিবার।


