ডায়াল সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজারে ডিমের প্রতি পিসের দাম হলো সাড়ে ১২ টাকা। মাছ-মাংসের চড়া দামের পর ডিমের বাজারেও এখন চরম অস্বস্তি। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সহজলভ্য বলে পরিচিতি এ খাদ্যপণ্যের।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!দুই মাসের ব্যবধানে ফের ডিমের ডজন ১৫০ টাকায় উঠেছে। যা আগেও ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডজনপ্রতি ৩০ টাকা বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ভোগান্তি বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খামারে ডিমের দাম বাড়েনি, উৎপাদনও কমেনি। আড়তদারেরা সিন্ডিকেটে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করছে।
আড়তদাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, ডিমের সরবরাহ কম। তবে চাহিদা বেশি। সরবরাহ ও চাহিদার এ পার্থক্যের কারণেই দাম বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে শহরের পশ্চিমবাজার, টিসি মার্কেট ও চাঁদনীঘাট এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম রোজার সময় কিছুটা কমেছিল। সেসময় ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। ঈদের পরই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। বাড়তে থাকে দামও। সর্বশেষ তিন-চারদিনের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ৬ টাকা বেড়েছে। এতে খুচরা বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫০ টাকা। ডজনপ্রতি এ ডিমের দাম ঠেকেছে ১৫০ টাকায়।
পশ্চিমবাজার এলাকার কয়েকজন আড়তদার জানান, ডিমের সরবরাহ কম। তবে চাহিদা বেশি। সরবরাহ ও চাহিদার এ পার্থক্যের কারণেই দাম বাড়ছে। গ্রামের অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রাম থেকেও ডিম কম আসছে।
ডজন হিসাবে প্রতি পিস ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে টিসি মার্কেটের খুচরা ডিম বিক্রেতা করিম মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বাড়ায় প্রতি ডজন ফার্মের ডিম এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আরেক খুচরা ডিম বিক্রেতা কৃপেশ সরকার বলেন, ডিমের দাম বাড়ায় আগে যে কাস্টমার দুইহালি ডিম নিতেন তিনি এখন একহালি ডিম নিচ্ছেন।
দিনমজুরের কাজ করেন শহরের সৈয়ারপুর এলাকার মইন আলী। তিনি বলেন, পাড়ার দোকানে এক পিস ডিম কিনতে ১৩ টাকা নিচ্ছে দোকানদার। যে যার মতো করে দাম নিচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
রিকশাচালক হাসান আলী বলেন, বাজারে মাছ-মাংসের দাম এমনিতেই বেশি। আগে সস্তায় ডিম কেনা যেতো। এখন সেটাও হচ্ছে না। ফার্মের ডিমও আমাদের মতো গরিব মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
চাঁদনীঘাট এলাকার হাবিবুর রহমান বলেন, গতরাতে ১০০ টাকায় দুই হালি মুরগির ডিম কিনেছি। হঠাৎ এত মূল্যবৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে।
এদিকে পশ্চিমবাজার এলাকার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। যা দুই মাস আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। যা দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।
মৌলভীবাজার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় তদারকিমূলক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের অপরাধে অনেক প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। অভিযান চলাকালে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়। জনস্বার্থে ব্যবসায়ীদের দ্রব্যমূল্যের অযৌক্তিক বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত মুনাফা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

