ডায়ালসিলেট ডেস্কঃঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা বাজারের একটি মহিলা মাদরাসায় শিক্ষকের লাগাতার ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক ছাত্রী (১৪)। ওই ছাত্রী শিক্ষকের ‘ধর্ম মেয়ে’ বলে পরিচিত। এ ঘটনা প্রকাশ হয় চার দিন আগে। এরপর থেকে সালিসকারীরা থানায় না পাঠিয়ে ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে দফায় দফায় জরিমানা ধার্য্য করে যাচ্ছেন। আজ রবিবার পর্যন্ত এ ঘটনার কোনো ফয়সালা হয়নি। ফলে ধর্ষণের শিকার ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!স্থানীয় সূত্র জানায়, উম্মাহাতুল মোকমেনিন আদর্শ মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মাওলানা আবুল মনসুর (৫৫)। এলাকায় ‘হুজুর’ বলেই ব্যাপক পরিচিত। ওই হুজুর হচ্ছেন উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামের মো. বছির উদ্দিনের ছেলে। গত প্রায় দশ বছর আগে তিনি পাশের উচাখিলা বাজারের জমি ক্রয় করে বাসাবাড়ি করেন। বাসার সামনেই গড়ে তোলেন মাদরাসা। কোরআন শিক্ষার পাশপাশি একাধিক শিক্ষক রেখে তিনি এখানে কোচিং ব্যবসাও করেন। এলাকার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী মাদরাসাটিতে পড়াশোনা করে।
জানা যায়, হজুর আবুল মনসুর এলাকাতেই দুটি বিয়ে করেছেন। দুই স্ত্রীও এক সাথে বসবাস করেন। এ অবস্থায় পাশের একটি গ্রামের কিশোরীকে ‘ধর্ম মেয়ে’ বানিয়ে ওই বাড়িতে যাতায়াত করেন নিয়মিত। এক পর্যায়ে হতদরিদ্র ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে বলে কয়ে নিজ খরচেই মাদরাাসায় রেখেই পড়াশোনা করার দায়িত্ব নেন। এর মধ্যে তার কুমতলবের কারণে কিশোরী তার কাছ থেকে চলে যায় বাড়িতে। বেশ কয়েকদিন আর মাদরাসায় যায়নি। কিশোরীর মা জানান,তার মেয়ে আর মাদরাসায় যাবে না বলে মন খারাপ করে থাকে। আর কোনো কিছুই বলে না। এ অবস্থায় একদিন হুজুর বাড়িতে এসে অনেক হাদিসের কথা বলে ফের মেয়েকে নিয়ে যান। মাসখানেক পর মেয়ে আবার বাড়িতে চলে এসে জানায় বিভিন্ন শপথ করে হুজুর তাকে স্বামী-স্ত্রীর মতো ব্যবহার করে আসছেন এবং প্রতিবাদ করায় বিয়ে করবেন বলে সাদা স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর নেন।
ঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে গত শুক্রবার কথিত হুজুরকে ডেকে আনা হয়। সেখানে চেয়ারম্যানের কাছে মেয়েটি দিনের পর দিন ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দেয়। ঘটনাটি সালিসে মীমাংসার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব না হওয়ায় ঘটনাটি ব্যাপক প্রচার হয়। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান একএম মোতব্বিরুল ইসলাম ধর্ষণের শিকার মেয়ের পরিবারকে থানায় যেতে পরামর্শ দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্য সালিসকারীরা মেয়ের পরিবারকে আটকে আবারও সালিসের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন আলামত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে, অন্যদিকে ধর্ষক শিক্ষক চেষ্টা করছেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে।

