oppo_1024

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে একটি রুমে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

মঙ্গলবার (৪ জুন) গভীর রাতে যবিপ্রবির শহিদ মসিয়ূর রহমান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার ৩০৬ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় করা লিখিত অভিযোগ তুলে নিতে তাকে রাতভর নির্যাতন করে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা। পরে ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে।

 

 

বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যবিপ্রবি প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন।

 

 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম শাহরীন রহমান প্রলয় (২৪)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রাবাসের আবাসিক বাসিন্দা।

জানা গেছে, গত ৩ জুন সোমবার ক্যাম্পাসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শাহরীনকে মারধর করেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান ২০২৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী শাহীনুর রহমান।

 

 

 

এই ঘটনায় শাহীনুরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেন শাহরীন। ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে ছাত্রাবাসের শাহরীনের কক্ষ থেকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষে নিয়ে যায়। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

পরে সভাপতি সোহেল রানারসহ তার অনুসারীরা শাহরীনকে এলোপাতাড়ি মারধর ও রড দিয়ে পেটানো হয়। রাত দুইটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানায় ঐ শিক্ষার্থী। ঘটনাটি যাতে কেউ না জানতে পারে সেজন্য ভুক্তভোগী শাহরীন ও তার সহপাঠী আমিনুল ইসলামের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং তাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

 

 

একপর্যায়ে ঘটনা জানাজানির ভয়ে বুধবার (৫ জুন) সকালে মোটরসাইকেলযোগে কালীগঞ্জ বারোবাজার গ্রামের বাড়ি চলে যান ভুক্তভোগী।

দুপুরে শাহরীনের মায়ের মুঠোফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না জানাতে হুমকি দেয়া হয়। বিষয়ে কেউ যদি জানে তাহলে বাড়িতে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয় দুর্বৃত্তরা।

 

 

 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন জানান,গত সোমবারের ঘটনায় আমাকে মাথা ফাটিয়ে দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এই ঘটনায় জেরে ঘুম থেকে তুলে রাত দুইটার সময় ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ভাইয়ের নির্দেশে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মী আমিনুল ইসলাম ও সিয়াম। সভাপতির কক্ষে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রলীগ নেতা আশিকুজ্জামান লিমন, ইসাদ, রায়হান রহমান রাব্বি, বেলাল হোসেন, শেখ বিপুল, রাইসুল হক রানাসহ প্রায় ১০-১৫ জন আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং মারধর শুরু করে। এসময় তাদের আঘাতে রুমের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ি। তখন তারা আমাকে পা দিয়ে লাথি মারতে থাকে। এসময় তারা বলতে থাকে কেনো প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিস?এক পর্যায়ে তারা মোটা রড দিয়ে আমার সারা শরীরে পেটাতে শুরু করে। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় এমন নির্যাতন করে তারা। এসময় তারা আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। এমন সময়ে আমার মনে হচ্ছিল আমিও মনে হয় বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো মরে যাবো।

 

 

 

প্রাণে বাঁচতে আমি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ভাইয়ের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানাই। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, কালকের মধ্যে অভিযোগ তুলে নিবি, না হলে তোকে গুলি করে মারবো। এসময় সোহেল আমাকে বুকে লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি চলে যাবি বলে নির্দেশ দেয়।

 

 

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। তাকে এতই ভীতসন্ত্রস্ত মনে হচ্ছিল যে কথা বলতে পারছিলো না। তাকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *