ডায়ালসিলেট::

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সিলেটে খুন হওয়া নববধূ তামান্নার মা হাফিজুন চৌধুরীর অভিযোগ, যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। মেয়ের শোকে কাতর মা জানালেন- ‘বিয়ের আগে তারা বলেছিল কোনো মালপত্র কিংবা টাকা লাগবে না। তারা কেবল কনে চায়। কিন্তু বিয়ের পরই পাল্টে যায় তাদের চেহারা। টাকার জন্য বার বার চাপ দেয়া হতো তামান্নাকে। টাকা না দিলে করা হতো নির্যাতন।’ তিনি জানান- ‘মেয়ের ওপর নির্যাতন কমাতে তিনি ধার-কর্জ করে ২০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন। এতেও মন গলেনি তাদের। শেষ পর্যন্ত মেয়েটিকে মেরেই ফেললো।’ তামান্নার জন্য কাঁদছে তার পরিবার, আত্মীয় স্বজন।

ঘাতক আল মামুনের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন তারা। গত সোমবার বিকালে সিলেটের উত্তর কাজিরটুলার ভাড়া বাসা থেকে সৈয়দা তামান্না বেগম নামের নববধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামী আল-মামুন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ। এ কারণে এই হত্যাকাণ্ডের সন্দেহ স্বামী আল-মামুনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সোমবার রাতে নিহতের ভাই সৈয়দ আনোয়ার হোসেন রাজা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আল মামুনসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামুন ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- এমরান, পারভীন, মাহবুব সরকার, বিলকিস ও শাহনাজ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে- মামলা দায়েরের পর রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামুনের আত্মীয় এমরানকে গ্রেপ্তার করেছে। এমরানকে সুবহানীঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত এমরান বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার চরহোগলা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। এমরান পলাতক মামুনের বোনের জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে রাতে জিজ্ঞাসাবাদ করেও পলাতক আল মামুনের ব্যাপারে কোনো তথ্য বের করতে পারেনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) জানিয়েছেন- গ্রেপ্তার ইমরানের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড শুনানি হয়নি। তিনি বলেন- পলাতক থাকা আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে রয়েছে। এদিকে- নিহত সুলতানার স্বামী আল মামুনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের অন্ত নেই। নগরীর আল মারজানে রয়েছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখানে তার সঙ্গে নানা বিরোধ ছিল বিভিন্ন জনের। টাকা-পয়সা ধার দেনার কারণে এই মতবিরোধ দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন কয়েক জন ব্যবসায়ী। দুই মাস আগে তামান্নাকে বিয়ে করার পর আল মামুনের বিরুদ্ধে গুরুতর একটি অভিযোগ পাওয়া যায়। সুলতানাকে বিয়ের আগে আরেকটি বিয়ে করেছিলেন মামুন। আগের স্ত্রীর দায়ের করা একটি মামলাও রয়েছে। সেই স্ত্রীর ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে মামুনের। তামান্নার খালাতো ভাই মো. ইকবাল অভিযোগ করেছেন- মামুন আগেও একটি বিয়ে করেছে। সেই বিয়ের বিষয়টি গোপন করে তামান্নাকে বিয়ে করে। এ ক্ষেত্রে মামুনকে সহায়তা করেন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শাহনাজ পারভিন নামের এক মহিলা কর্মকর্তা। পারিবারিক সূত্র জানায়- ওই মহিলা মামুনকে তার চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন। বিয়ের আগে যখন কথাবার্তা চলছিল তখন ছেলে স্থানীয় না হওয়ার কারণে তারা মত দেননি। চার মাস পর তামান্নার মা হাফিজুন নেছা বিয়েতে মত দেন। এরপর শাহানাজ পারভিন বিয়েতে নিজেও টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন তামান্নার মাকে। এদিকে- সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার নিহত তামান্নার লাশের ময়না তদন্ত হয়। এরপর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *