সিলেটের রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানের নামে ৩০০ মানুষের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ট্র্যাভেলস মালিক আমিনুর রহমানকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে সিলেটের অতিরিক্তি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলী মাহমুদ।
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. হাসান বলেন, রিমান্ড মঞ্জুরের পাশপাশি আদালত আমিনের মালিকানাধীন আমিন রহমান ট্যাভেলস ও তার বাসা তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তল্লাশি চালিয়ে যেসব পাসপোর্ট ও টাকাপয়সা পাওয়া যাবে তা জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরে আগে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। সুনামগঞ্জের ছাতকের বাসিন্দা আমিন নগরের উপশহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত রোববার আমিন রহমান ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মানবপ্রাচার আইনে মামলা করেন ফখরুল ইসলাম নামের এক ভূক্তভোগি।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের পর মামলার বাদি ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত চাই। এগুলো পেলেই মনে করবো ন্যায় বিচার পেয়েছি।
জানা যায়, সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ হক সুপার মার্কেটে অবস্থিত ‘আমিন রহমান ট্রাভেলস’ নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক আমিন রহমান রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে লোকজনের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়ে যান।
ভূক্তভোগীরা জানান, ৯০ দিনের মধ্যে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় ‘আমিন রহমান ট্রাভেলস’। ওই বিজ্ঞাপন দেখে তারা হক সুপার মার্কেটস্থ ট্রাভেলসে যোগাযোগ করেন। তখন ট্রাভেলসের মালিক আমিনুর রহমান জানান, রোমানিয়ায় যেতে হলে ৬ লাখ টাকা লাগবে। প্রথমে বুকিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও ওয়ার্কপারমিট আসার পর দিতে হবে আরও ৫০ হাজার টাকা। বাকি ৫ লাখ দিতে হবে ভিসা হওয়ার পর। আমিনের কথামতো রোমানিয়ায় যেতে আগ্রহীরা তার সাথে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি করে টাকা দেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রোমানিয়ায় ফ্লাইট দেয়া শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন বিকেল ৪টা থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দেন তিনি। পরে অনেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের পাসপোর্টে লাগানো ভিসাও ছিল জাল। এছাড়া অনেককে ভিসা হওয়ার কথা বললেও তাদেরকে পাসপোর্ট ফেরত দেননি আমিন।
গত শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আমিন রহমান ট্রাভেলসের সামনে বিক্ষোভ করেন প্রতারিতরা। এরপর রোববার থেকে বন্ধ রয়েছে আমিন রহমান ট্র‍্যাভেলস।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *