স্পোর্টস ডেস্ক :: নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা বেশ দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। নাজমুল হোসেন শান্ত এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন। আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। সবমিলিয়ে তৃতীয় দিন শেষে সিলেট টেস্টে চালকের আসনে বাংলাদেশ।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

২৬৬ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ৩য় দিন শুরু করেছিল কিউইরা। উইলিয়ামসনকে বারবার জীবন দিলেও শেষ পর্যন্ত লিডের স্বপ্ন দেখছিল স্বাগতিকরা। ৩য় দিন সকালে দ্রুত কিউইদের ফিরিয়ে দেওয়াটাই লক্ষ্য ছিল টাইগার বোলারদের। স্বল্প লিডও সিলেটের এই পিচে বাংলাদেশের জন্য হতে পারতো সাইকোলজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ। কিন্তু ৩য় দিন দেখেশুনে ব্যাট চালিয়েছেন দুই টেলএন্ডার ব্যাটার কাইল জেমিসন এবং টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডকে এনে দিয়েছেন লিড। ২৬৪ রানে ৮ম উইকেট পতনের পর নবম উইকেটে এই দুজন গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছিল বাংলাদেশের।

 

তৃতীয় দিন সকাল থেকেই নিরীহ-নির্বিষ বোলিং করেছে বাংলাদেশ। একে একে আক্রমণে আনা হয়েছে তিন স্পিনার আর এক পেসারের সবাইকে। তবে উইকেট তো দূরে থাক ন্যূনতম চাপটাও সৃষ্টি করা হয়নি টাইগার বোলারদের। বরং ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের হতাশাই বাড়িয়েছেন জেমিসন-সাউদি। শেষ পর্যন্ত পার্ট-টাইমার মুমিনুলে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ।

 

প্রথমে হালকা সুইয়ে বিভ্রান্ত করেছেন কাইল জেমিসনকে। তার হালকা সুইংয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই পেসার। আউট হয়েছেন এলবিডব্লিউতে। চার বল পর প্রায় একই ডিলিভারিতে স্ট্যাম্প খুইয়েছেন সাউদি। ৭ রানের লিড নিয়েই থামে কিউইরা। ৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে অবিচ্ছিন্নই ছিল বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। কিন্তু বিরতি থেকে ফিরেই পথ হারান জাকির হাসান।

 

তৃতীয় দিনে এসেও সিলেটের উইকেটে খুব বেশি ভাঙন ধরেনি। তবে প্রথম দুই দিনের তুলনায় আজ সকাল থেকে কিছুটা হলেও বাড়তি টার্ন পেয়েছেন স্পিনাররা। সেই টার্নেই পরাস্ত হলেন জাকির। ১৩তম ওভারে অ্যাজাজ প্যাটেলের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল টার্ন করে পায়ে আঘাত হানে। আম্পায়ার আউট দিতে খুব বেশি সময় নেয়নি। ৩০ বলে ১৭ রান করে ফিরেছেন এই ওপেনার।

 

প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন এই ইনফর্ম ওপেনার। তবে আরো একবার ভাগ্যের কাছে হার মানতে হলো তার। ১৪তম ওভারের শেষ বলে টিম সাউদিকে স্টেট ড্রাইভ করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সেই বল বোলারের হাত ছুঁয়ে উইকেটে গিয়ে লাগে, জয় তখন ছিলেন পিচের বাইরে। ফলে ৪৬ বলে ৮ রান করে রান আউট কাটা পড়েছেন জয়।

 

শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে তিনে নেমে পাল্টা আক্রমণ করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে যোগ্য সঙ্গে দিয়েছেন মুমিনুল হক। ফলে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে চা বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরেও ভালোভাবেই এগোচ্ছিল শান্ত-মুমিনুল জুটি। কিন্তু হঠাৎ দ্রুত সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন মুমিনুল।

 

৪১তম ওভারের শেষ বলটি ‘ভি’ জোনে খেলে দ্রুত সিঙ্গেলস নিতে চেয়েছিলেন মুমিনুল, তার ডাকে শুরুতে সাড়া দেন শান্ত। কিন্তু বল সরাসরি মিড অনের ফিল্ডারের হাতে যাওয়ায় আবার পিচের ভেতর ফিরে আসেন অধিনায়ক, কিন্তু মুমিনুল আর সময়মতো ফেরত যেতে পারেননি। ৪০ রান করে মুমিনুল ফেরায় ভেঙেছে ৯০ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

 

মুমিনুল ফিরলেও এক প্রান্তে অচিবল ছিলেন শান্ত। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছেন শান্ত। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে কখনো কেউ করতে পারেনি।

 

শান্তর অপরাজিত সেঞ্চুরিতে তৃতীয় দিনটা নিজের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দিনশেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান তুলেছে তারা। শান্ত অপরাজিত আছনে ১০৪ রান করে। অপর অপরাজিত ব্যাটার মুশফিকের সংগ্রহ ৪৩ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের লিড এখন ২০৫ রানের, হাতে আছে ৭ উইকেট।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *