ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: দীর্ঘ ৩৯ দিন পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(শাবিপ্রবি) সশরীরে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারী) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করে শাবিপ্রবি।
এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরী সিন্ডিকেট সভার সিন্ধান্ত মোতাবেক আজ মঙ্গলবার থেকে সশরীরে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভা অনুযায়ী ১৪ ফেব্রুয়ারি বন্ধ থাকা হল খুলে দেয়া হয়। আর ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় অনলাইনে ক্লাস।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি জরুরী সিন্ডিকেট সভার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও পরদিন দুপুর থেকে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেন উপাচার্য। এতে দীর্ঘ ৩৯ দিন ধরে বন্ধ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শ্রেণি কার্যক্রম।
১৬ জানুয়ারি থেকেই উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। হল ছাড়ার নির্দেশনা অমান্য করে হলেই অবস্থান করেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।
২৭ দিন পর ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে তারা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এসময় দ্রুত ক্লাস শুরুর আহ্বান জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এর আগের দিন ১১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনিও শাবিতে এসে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর পরামর্শ দেন।
এরপর ২৮ দিন ঘরবন্দি অবস্থায় থাকার ১৩ ফেব্রুয়ারি পর সকালে নিজ কার্যালয়ে এসে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে ১৬ জানুয়ারি সর্বশেষ অফিস করেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন। ১৬ জানুয়ারি বিকেল কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওইদিন শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। ওই রাত থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
১৭ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসার সামনের ফটকে ব্যারিকেড দিয়ে ভেতরে কারো প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। একদিনের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন তারা। উপাচার্যের কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। ওইদিনই উপাচার্যের বাসার সামনের ব্যারিকেড তুলে নেন তারা। তবে এরপরও বাসায়ই ছিলেম উপাচার্য।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা দিপু মনি ক্যাম্পাসে আসলে ওইদিন ২৬ দিন পর বাসা থেকে বের হয়ে কার্যালয়ে এসে মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন উপাচার্য। ওই বৈঠকে উপাচার্যকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে, শিক্ষকদের সাথে বৈঠকের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। এতে উপাচার্যের বিষয়ে তাদের আপত্তির বিষয়টি আচার্যকে অবহিত করার আশ্বাস দেন দিপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রীর এই আশ্বাসের পরদিন সন্ধ্যায় আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন উপাচার্য। আর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন- আজ সত্যের জয় হয়েছে। মিথ্যে পরাভূত হয়েছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *