ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: চলমান কোটা সংস্কারের আন্দোলনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবার রাজপথে নেমেছেন শিক্ষক, নাগরিক সমাজ, আইনজীবী ও শিল্পীরা। গতকাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

 

 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা, আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ।

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি এখন সারাদেশব্যাপী পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে শিক্ষক নাগরিক সমাজ, আইনজীবী ও শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।

 

 

 

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচিও পালিত হয় । এসময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এতে ১২ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

 

 

 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মানববন্ধনে আসতে বাধা দেয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও সারা দেশে আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিতে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকের ওপর হামলা নির্বিচারে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

 

 

 

বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ’ ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। সমাবেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও একই দাবিতে এর আগে সকাল ১০টায় লোক প্রশাসন ও ১১টায় অর্থনীতি বিভাগ আলাদা ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

 

 

এসময় শিক্ষার্থীদের ওপর যারা গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের আটক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এসময় সর্বস্তরের মানুষকে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান বলেন, চট্টগ্রামে শিক্ষকদের বাসার সামনে বোমা ফেলা হয়েছে। শিক্ষকদের নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার ভুলে গিয়েছে এখন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, জনতা বলতে আলাদা কিছু নেই। বাংলাদেশের সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, দেশের জনগণের বিরুদ্ধে সরকার যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সেই যুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণই জয়লাভ করবে। কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে সরকার, নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে?

 

 

 

শিক্ষকরা বলেন, বুকে সাহস নিয়ে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে। একটি খুনি সরকারের কাছে আমি বিচার চাই না, কারণ সে নিজেই খুনি। এটা কোনো স্বাধীন দেশ? এটা যদি স্বাধীন দেশ হয় তাহলে এমন স্বাধীন দেশ আমি চাই না। প্রতিটি শিক্ষার্থী হত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত করতে হবে, প্রতিটি মানুষের রক্তের হিসাব নিতে হবে। এখন এই আন্দোলন জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবির আন্দোলন। এভাবে দেশের মানুষকে অন্যায়ভাবে গুম, খুন জেলে ভরা আর চলবে না।

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারছে না। আমি শিক্ষক, আমাকে পুলিশকে আইডি কার্ড দেখাতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কী উপাচার্যের কর্তৃত্বে চলে নাকি পুলিশ কনস্টেবলের কর্তৃত্বে চলে? আমরা শিক্ষাঙ্গন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যাহার চাই। শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাই।

 

 

 

এদিকে ঢাকাসহ সারা দেশে আটক সকল শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের ছেড়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে ডিএমপি’র গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *