ডায়ালসিলেট ডেস্ক::বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো কোভিডে ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামি ৩ বছরের মধ্যেই এসব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও প্রতিদিনকার কার্যক্রমে কোভিডের প্রভাব একদম কমে যাবে। বৃটেন ও ইসরাইলের মতো দেশগুলোতে ভ্যাকসিন এরইমধ্যে মৃত্যুর হার কমিয়ে এনেছে। কিন্তু দরিদ্র রাষ্ট্রগুলি যারা এখনো নাগরিকদের বড় অংশটিকে ভ্যাকসিন দিতে পারেনি তাদেরকে আরো কয়েক বছর কোভিডের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। ফলে ধনী ও দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অসমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। গেটস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ৯০ শতাংশ উন্নত রাষ্ট্রই মহামারির পূর্বের গড় আয়ে ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু মধ্য ও নি¤œ আয়ের দেশগুলোর ক্ষেত্রে মাত্র এক তৃতীয়াংশ রাষ্ট্র আগের অবস্থায় ফিরতে পারবে।
যদিও ভাল খবরও রয়েছে। ২০২১ সালের শেষ অংশে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখনো বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়ে গেছে। ফলে ২০২২ সালেও অনেক দেশেই পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা যাবে না। ফলে সেসব রাষ্ট্রে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশিই থাকবে। এরফলে তাদের পক্ষে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে।
২০২২ সালে উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে ব্যাপক মাত্রায় বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হবে। যদিও এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি ঠিক কখন বুস্টার ডোজ দিতে হবে। এখন যেসব ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে এগুলোই বুস্টার ডোজ হিসাবে ব্যবহৃত হবে। তবে ভ্যাকসিনের উন্নত ভার্সনও ততদিনে চলে আসতে পারে। আগামি বছরগুলোতে শিশুদের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদানের হার বৃদ্ধি পাবে। অনেক দেশে ৬ মাস বয়সি শিশুকেও ভ্যাকসিন প্রদান অনুমোদন করা হবে। এরপরেও অনেক দেশে মানুষের অনিচ্ছার কারণে জনসংখ্যার একাংশ ভ্যাকসিন থেকে দূরে থেকে যাবে।
তবে ২০২২ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের অনেক দেশ হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করে ফেলবে। এছাড়া কোভিডের চিকিৎসাও আরও সহজ হয়ে উঠবে। এতে করে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টির সম্ভাবনাও কমে যাবে। মডার্নার প্রধান স্টিফেন ব্যান্সেল জানিয়েছেন, তার কোম্পানি একটি মাল্টিভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে। এই ভ্যাকসিন হবে এমআরএনআর প্রযুক্তিতে তৈরি যা কোভিডের একাধিক ভ্যারিয়েন্টকে মোকাবেলার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হবে। একইসঙ্গে তিনি এমন একটি ভ্যাকসিন তৈরির কথা ভাবছেন যা করোনাভাইরাসসহ ফুসফুসের অন্য রোগের থেকেও সুরক্ষা দেবে।
সামনের বছরগুলোতে ধনী দেশগুলো এন্টিবডি চিকিৎসার মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলায় মনোযোগি হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের মতো দেশগুলোতে রেজেনেরন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ককটেইলগুলোর ব্যাপক ব্যবহার হবে। তবে সবথেকে বেশি আশা জাগাচ্ছে এন্টিভাইরাল ওষুধগুলো। এরইমধ্যে বৃটেন মলনুপিরাভির নামের এক মুখে খাওয়ার ওষুধকে কোভিড চিকিৎসার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এই ওষুধ কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুর হার অর্ধেকে নিয়ে এসেছে। অপরদিকে ফাইজারও একইরকম একটি এন্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি করেছে। যেটি মৃত্যুর হার কমিয়ে দেয় প্রায় ৯০ শতাংশ। তবে এটি এখনো মার্কিন সরকার অনুমোদন দেয়নি। সামনের বছরগুলোতে এই ওষুধগুলো ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহার শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে মলনুপিরাভিরের ১.২ বিলিয়ন কোর্স ক্রয়ের অর্ডার দিয়ে রেখেছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *