সংবাদ সম্মেলনে আনা অভিযোগের প্রতিবাদ সিসিক মেয়রের
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরীর হিন্দু আলী পুকুর দখলের অভিযোগ ওঠেছে। বুধবার বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন সৈয়দানী বাগ (সৈয়দ বাড়ি) এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব।
তার দাবি, স্থানীয় ভুমিখেকোদের সাথে নিয়ে পুকুরটি দখল করতে সিসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ব্যবহার করছেন তিনি। এছাড়া উচ্চ আদালতের স্থিতবস্থা থাকা সত্ত্বেও ‘জনগণের পুকুর’ দাবি করে এটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন আরিফ। হিন্দু আলী পুকুর সৈয়দ খালেদের মৌরসী সম্পত্তির অংশ বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব বলেন, হিন্দু আলী পুকুর তাদের মৌরসী সম্পত্তির অংশ। বংশ পরম্পরায় পুকুরটি ভোগ দখল ও মৎস্য চাষ করে আসছেন তারা। গত ৯ আগস্ট সকালে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে সিসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা হিন্দু আলী পুকুরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে সম্পত্তির মালিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে চাইলে সিসিকের পরিচ্ছন্নতা সুপারভাইজার রশিদ বলেন, মেয়রের নির্দেশে পরিষ্কার পচ্ছিন্নতার কাজ করা হচ্ছে। এসময় পুকুরটি পরিচ্ছন্নতার কাজে আসা লোকদের সঙ্গে কতিপয় কয়েকজন ব্যক্তি এসে গালিগালাজ শুরু করেন। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণের চেষ্ঠা করলে মালিকগণ চলে যান। পরে পুলিশ মোতায়েন করে পুকুরে কাজ অব্যাহত রাখেন মেয়র আরিফ।
সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব বলেন, হিন্দু আলী পুকুরটি আমাদের মৌরসী সম্পত্তি। এটা জনসাধারণের কোনো পুকুর নয়। পুকুরের অন্যতম রেকর্ডিও মালিক মোছা. আছক বানুর কন্যা মোছা. আমিনা খাতুনদের কাছ থেকে সৈয়দ আজিজুল হোসেনরা ক্রয় করেন। আমিনা খাতুন হলেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মা। ক্রয় সূত্রে সৈয়দানীবাগ হিন্দু আলী পুকুরটি পূর্বসূরীদের আমল থেকে ‘সৈয়দ মৎস্য খামার’ হিসেবে মাছ চাষ করে আসছিলেন আজিজুল হোসেনসহ ক্রয়কারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪-৭৫ সালে পুকুরটি সংস্কার করা হয়। পরবর্তীতে সৈয়দ নুরুল হোসেনের উত্তরাধিকারী সৈয়দ নাহিদ রহমান সাব্বির এবং সৈয়দ খাদিম হোসেনের উত্তরাধিকারী সৈয়দ তাজিদুল হোসেন বাবুল পুকুরটি বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল ও মৎস্য চাষ করে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব আরও বলেন, ২০০৮ সালে পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে কবুলিয়তি হিসেবে বসবাসকারী পিয়ারা, দিলাল, দুলাল, রিফাত, জয়নালসহ কতিপয় বহিরাগতরা পুকুর থেকে মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় জিডি দায়ের করা হয়। এর জেরে তারা পুকুরটিকে ‘জনগণের পুকুর’ দাবি করে সৈয়দ মৎস্য খামারের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে সৈয়দ আজিজুল হোসেনকে তারা রক্তাক্ত জখম করলে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে কবুলিয়তিরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মালিক পক্ষের জবাব দাখিলের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর আদালত মামলটি খারিজ করে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ খালেদ হোসেন বলেন, সিসিক মেয়র পুকুরটি দখলের চেষ্ঠ করছেন। উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা জারি থাকা সত্বেও তিনি আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক পুকুর দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। আইনগত ভাবে মৌরসী সম্পত্তির ওপর অন্য কারো হস্তক্ষেপ বেআইনী। সরকারও প্রয়োজনে ভূমি নিতে চাইলে তিনগুণ মূল্য দিয়ে অধিগ্রহণ করে নিতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দ বখতিয়ার হোসেন, সৈয়দ আফজাল হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ খালেদ হোসেন, সৈয়দ রাহাদ হোসেন, সৈয়দ মাহিদ রহমান সাব্বির, সৈয়দ আশরাফ হোসেন, সৈয়দ আতাউর হোসেন সাজুল, সৈয়দ ফজিলত হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মো. ফারুক আহমদ, মহনুর রহমান (মখই মিয়া), তুলা খা, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল্লা আল মামুন, মো. কামাল আহমদ, সৈয়দা ফাহমিদা হোসেন, সৈয়দ তারেক হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দা হেলেন বেগম, মো. হাবিবুর রহমান (হাসাদ), মাহমুদ ইয়াসিন, মতিন আহমদ, মো. হোসেন, আব্দুল আহাদ, শিমুল আহমদ, রুমেল খান।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সংবাদ সম্মেলনে আনা অভিযোগের প্রতিবাদ সিসিক মেয়রের :: সিলেট নগরের তেররতনের হিন্দু আলী পুকুর দখল নিয়ে উত্তাপিত অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বুধবার রাতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রতিবাদপত্রে মেয়র বলেন, বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের সংবাদে আমার বিরুদ্ধে সৈয়দানী বাগের বাসিন্দা সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব অ্যাডভোকেট ‘পুকুর’ দখলের অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে করা এ অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। যা মানহানীর সামিল। তিনি বলেন, গত ৯ আগস্ট ২০২২ সিসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা উল্লেখিত পুকুর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে যায়। কোন অবস্থাতেই সিসিকের কর্মীরা পুকুর দখল করতে যায়নি। তারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুকুরটি পরিচ্ছন্ন করে পুকুরের পানি নাগরিকদের ব্যবহার উপযোগি করার দায়িত্ব পালন করে।
মেয়র আরও বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি সাম্প্রতিক বন্যা পরবর্তি সময়ে সিলেট মহানগরের সকল খাল, নালা, পুকুর, জলাশয় উদ্ধার ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে পানির প্রবাহ ও পানি ব্যবহার উপযোগি করার নির্দেশণা দেন। সে অনুযায়ী নগরের সকল খাল, নালা, জলাশয় ও পুকুর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এরই অংশ হিসেবে সৈয়দানী বাগের পুকুরটিও পরিচ্ছন্ন করার উদ্দ্যোগ নেয় সিসিক।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *