স্পোর্টস ডেস্ক :: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে বেরিয়ে এলেন ‘রয়্যালস হেরিটেজ’ লেখা সাদা টি-শার্ট পরে। প্রিয় খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকেও এই ব্র্যান্ডেরই টি-শার্টে দেখা গিয়েছিল একাধিকবার। মাথায় ‘হুগো বস’ ব্র্যান্ডের ক্যাপ। সাকিব আল হাসান বসই তো!
পরিবারের একাধিক সদস্য হাসপাতালে ভর্তি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা মনের এক কোণে রেখে তবু থেকে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দলের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ হয়েছে সার্থক। সেঞ্চুরিয়নে গতকাল রাতে ইতিহাস গড়ার মুহূর্তটা এসেছে সাকিবেরই ব্যাটে। চার মেরে বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দেওয়ার পর সতীর্থদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এরপরই রওনা হয়েছেন দেশের উদ্দেশে।
জোহানেসবার্গ থেকে কাতারের রাজধানী দোহা হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ঢাকায় এসে পৌঁছাতেই সাকিবকে মৌমাছির মতো ঘিরে ফেললেন সাংবাদিকেরা।
নিজের ৩৫ তম জন্মদিনের রাতে প্রিয়জনদের কাছে ফেরার আগেই সাকিব সংবাদমাধ্যমকে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘খুবই ভালো লাগছে। প্রথমবার যেকোনো কিছু হলেই ভালো। দেশের বাইরে এমন কন্ডিশন পেয়েছি, যা আমাদের প্রতিকূলে ছিল না। সেখানে সিরিজ জিততে পারা দারুণ ব্যাপার।’
এখন আরও বড় স্বপ্ন দেখছেন সাকিব, ‘এভাবে জিততে থাকলে মনে হয় ২০২৩ বিশ্বকাপও জেতা সম্ভব। তবে হারতে থাকলে উল্টো চিন্তা মাথা আসবে।’
সিরিজ জয়ের রহস্য ও দলের পরিকল্পনা কাউকে জানাতে চান না সাকিব, ‘খেলোয়াড় থেকে কোচিং স্টাফ—সবারই অবদান ছিল। ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা দলের ভেতরকার বিষয়। এগুলো বাইরে আনতে চাই না। সবাই ভালো করেছে। এটা স্বস্তির ব্যাপার।’
বাংলাদেশের সাবেক দুই প্রোটিয়া ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও অ্যাশওয়েল প্রিন্সকেও কৃতিত্ব দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, ‘দলের বেশির ভাগই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। নিজেদের দেশ সম্পর্কে তাঁদের ভালো জানাশোনা ও সুস্পষ্ট ধারণা আছে। ওরা যে পরিকল্পনাগুলো আমাদের শেয়ার করেছে, স্বাভাবিকভাবেই সেসব কাজে লেগেছে। ম্যাকেঞ্জি-প্রিন্সও আমাদের সঙ্গে আগে কাজ করেছেন। ওদের ড্রেসিং রুমের চিন্তা-ভাবনাগুলো আমরা তাঁদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।’
পেস-সতীর্থদের পারফরম্যান্স নিয়ে বেশ তৃপ্ত সাকিব, ‘আমাদের পেস বোলাররা বেশ কিছু দিন হলো ভালো বোলিং করছে। যে কারণে আমরা নিউজিল্যান্ডেও টেস্ট জিততে পেরেছিলাম। ওদের ওপর টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা বেড়েছে। ওরাও প্রতিদান দিচ্ছে। তাসকিনের কথা আলাদা করে বলতে হয়। ও অনেক উন্নতি করেছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ ক্রিকেটাররা টেস্ট সিরিজের বদলে আইপিএলের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার সাগরে ডুব দিতে চলেছেন। লাল বলের ক্রিকেটে তাই খর্ব শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামতে হচ্ছে প্রোটিয়াদের। ব্যাপারটা আশাবাদী করে তুলছে সাকিবকে, ‘টেস্ট সিরিজ ভীষণ চ্যালেঞ্জিং হবে। টেস্টে স্বাগতিকেরা কন্ডিশনের সুবিধা বেশি পায়। তবে ওদের মূল দলের কয়েকজন খেলোয়াড় থাকছে না। আমরা আশাবাদী হতেই পারি।’
জরুরি ভিত্তিতে ফিরে এলেও পরিবারের সদস্যদের শারীরিক অবস্থা বুঝে আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে পারেন সাকিব। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামতে পারেন তিনি। তবে ৩১ মার্চ শুরু হতে যাওয়া টেস্টে সিরিজের প্রথম ম্যাচে না তাঁর খেলার সম্ভাবনা নেই।
গত কয়েক দিন ধরে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন সাকিবের মা শিরিন আক্তার। একমাত্র ছেলে আইজাহ আল হাসান ও ছোট মেয়ে ইরাম হাসান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তারাও হাসপাতালে ভর্তি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *