ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: হবিগঞ্জ-৪ আসনের চুনারুঘাট মাধবপুরে ৪৩ বছর পর নৌকা ডুবেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে হারিয়েছেন। ফলে অনেক বছরের ইতিহাস পরিবর্তন হয়েছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
জানা গেছে, এ আসনে নৌকার টিকিট পান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এর কিছুক্ষণ পরেই সৈয়দ সুমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করেন এবং রাতে চুনারুঘাট মধ্যবাজারে এক পথসভায় প্রার্থিতা নিশ্চিত করে কর্মীদের প্রচারে নামার আহবান জানান।
ঘোষণার পর যুবসমাজের সিংহভাগ অংশ সৈয়দ সুমনের জন্য প্রচারে নেমে পড়ে। প্রবাসীদের ৯৫ শতাংশ সুমনের পক্ষে ফেসবুক গরম করে রাখে। সৈয়দ সুমন চুনারুঘাট পৌর শহরে তার নিজস্ব বাসায় কর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। সেটি চলে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত। দলমত নির্বিশেষে যুবাদের সিংহভাগ প্রচারে নামে। বিগত ১৫ বছর ধরে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি গঠন করে তরুণদের মনে জায়গা করে নেন।
তিনি ‘৯৫ ব্যাচ’ নামে একটি গ্রুপ খুলেন ফেসবুকে। এই গ্রুপে চুনারুঘাট মাধবপুর তথা সারা দেশের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। এই ৯৫ গ্রুপের সদস্যরা নানা স্থানে নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করত, সুমনের গুণগান প্রচার করত।
অপরদিকে ব্যারিস্টার সুমন ফেসবুক লাইভে পুল-কালভার্টের চিত্র তুলে ধরেন এবং প্রবাসীদের দান করা টাকা দিয়ে অর্ধশতাধিক পুল-কালভার্ট নির্মাণ করে মানুষের নজরে আসেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ সুমন প্রচারেও ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেন। প্রচার মাঠে তিনি একা বক্তৃতা দিয়েছেন।
কাউকে তিনি মঞ্চে উঠতে দেননি, তার পাশে কাউকে দাঁড়াতে দেননি। সুমনের পক্ষে প্রচারে শামিল হন অনলাইন সেলিব্রিটি মাওলানা তাহেরী, চিতল মুখলিছ, শুক্কুর আলী। ওয়াজের মাহফিলগুলোতে ব্যারিস্টার সুমন সমানে অংশ নেন। প্রচার মাঠে তিনি যুবসমাজকে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আকৃষ্ট করেন।
তিনি বলেন, চুনারুঘাট-মাধবপুরকে তিনি এমনভাবে সাজাবেন, অন্য জেলার মানুষ এখানে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাগল থাকবে। প্রতিটা ইউনিয়নে তিনি খেলার মাঠ নির্মাণ করবেন। যুবকদের বেকারত্ব দূর করবেন। কোনো রাস্তা উন্নয়নের বাকি থাকবে না। এলাকাকে সারা বিশ্বে মডেল হিসেবে দাঁড় করাবেন। সৈয়দ সুমনের সম্মোহনী কথায় আবালবৃদ্ধবনিতা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে গড়ে ৯০ শতাংশ ভোট তিনি ভাগিয়ে নিতে সক্ষম হন।
চা বাগান থেকে শুরু করে গ্রামঅবধি মাইনোরটি ভোটের ৭০ শতাংশ ভোট তিনি ঈগল মার্কার পক্ষে আদায় করে নেন। ভেঙে দেন ৫০ বছরের ইতিহাস। চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-৪ আসন।
এ আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ১০ হাজার ৭২০ জন। এ আসনে বরারবই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ কারণে এ আসনে দলের একাধিক নেতা মনোনয়ন পাওয়ার আশায় চেষ্টা তদবির করে থাকেন। তেমনি ব্যারিস্টার সুমনও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চমক দেখালেন।

