হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ জনের মধ্যে ৮ জন হবিগঞ্জে জেলার বাসিন্দা। মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন থেকে নাম-পরিচয় জানানোর পর এ তথ্য জানা গেছে।

নিহতরা হলেন- হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের বহুলার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের সোহামনি (৩), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)।

নিহত আলী মোহাম্মদ ইউসুফের বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবেল চৌধুরী বলেন, ‘ইউসুফ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। স্ত্রী চট্টগ্রামে চাকরি করার সুবাদে তিনি প্রায়ই সেখানে যাতায়াত করতেন। গতকালও তিনি তাদের আনতে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিলেন ইউসুফ। বাবা ও ভাই না থাকায় তিনিই পরিবারের হাল ধরেছিলেন। লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন নামে একটি স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।’

দূর্ঘটনায় নিহত হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের শিশু ইয়াছিন আরাফাতের নিকট আত্মীয় অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান সজল জানান, মরদেহ নিয়ে স্বজনরা রওনা দিয়েছে। তার বাবাও প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হযেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ইয়াছিন স্থানীয় বহুলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিল।

চুনারুঘাটের নিহত রুবেলের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় শানখলা মাদ্রাসার দাখিল পড়ুয়া ছাত্র ছিলেন রুবেল। ৫ বন্ধু মিলে কক্সবাজার বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে ফিরতে হলে তাকে।’

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে প্রতি মহেুর্তে আমার যোগাযোগ হচ্ছে। এছাড়া নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে।’

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য- সোমবার দিনগত রাত ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তূর্ণা নিশীথা’র সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। এ ঘটনার তদন্তের জন্য ৫টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *