প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
ডায়ালসিলেট ডেস্ক:প্রচণ্ড শীতে প্রতিদিন খালি গায়ে সকাল হলে বাড়ির লোকজন যুবক বলহরিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন; রাত হলে ঘরে নিয়ে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা হয় তাকে।
বয়স যখন ৯, সেই থেকেই মানসিক সমস্যা দেখা দেয় বলহরির। দীর্ঘ ২৫ বছর এভাবেই কাটছে বলহরির জীবন। দিনে এক-দুবার খাবার দেয়া হয়। মলমূত্র ত্যাগ করেন বাঁধা অবস্থায়। মানুষ দেখলে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকেন। মাঝেমধ্যে আবার উত্তেজিতও হয়ে ওঠেন।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের রবিকান্ত দাসের ছেলে বলহরি।
জানা যায়, ছোট বয়সে খুব ডানপিটে ও ভালো ছাত্র ছিল বলহরি। দরিদ্র বাবা-মার স্বপ্ন ছিল বলহরিকে পড়ালেখা করাবে কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস ৯ বছর বয়স থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
বলহরির দিনমজুর বাবা ছেলেকে বরিশাল নিয়ে মানসিক চিকিৎসক দেখান; কিছু দিন ভালো থাকার পর আবার আগের মতো হয়ে যায়। এবার আর অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেনি।
স্থানীয় ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, খারাপ আচরণ করত; তাই পরিবারের লোকজন ২৫ বছর ধরে এভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন বলহরিকে। সরেজমিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বলহরিকে মোটা রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। গাছের সঙ্গে জীর্ণশীর্ণ শরীর নিয়ে শীতের বিকালে কাঁপছে। কঙ্কালসার দেহ নিয়ে তাকিয়ে আছে, মাঝে মাঝে হাউমাউ করে কিছু বলার চেষ্টা করছে।
এর মধ্যে একটা গেঞ্জি নিয়ে আসে এক বৃদ্ধা। আপনি কে জানতে চাইলে বলেন, আমি বলহরির মা। চোখেমুখে দারিদ্র্যপীড়িত কষ্টের ছাপ স্পষ্ট।
বলহরির মা জানান, বয়স যখন ৯, সেই থেকেই মানুসিক সমস্যা দেখা দেয়। ছোট বেলায় বরিশালের মানসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করিয়াছি। কিন্তু ভালো না হওয়ায় আর টাকা অভাবে উন্নত চিকিৎসা না করাতে পেরে এভাবেই ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখি।
এমন অমানবিকভাবে বেঁধে রাখার কথা জিজ্ঞাসা করলে বলহরির মা জানান, এলাকার মানসেরে খারাপ কথা কয়, মানসে ধরিয়া মারধর করে, বাড়ির মানসেরে ভয়ভীতি দেখায়। তাই রশি দিয়া বাইন্দা রাখি।
বলহরির বড় ভাইয়ের স্ত্রী বলেন, আমরা গরিব মানুষ টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারি নাই। করাতে পারলে হয়ত সে ভালো হত।
স্থানীয়রা জানান, ছোট সময় থেকে ওকে বেঁধে রাখা হয়। গরিব পরিবার তাই ভালো চিকিৎসা করাতে না পেরে নিরুপায় হয়ে বেঁধে রাখছে। আমরা কোনো দিন দেখিনি প্রশাসনের কোনো কর্তাব্যক্তি বলহরির এমন নির্মমতার কাহিনি দেখতে এসেছেন বা তার চিকিৎসার এতটুকু ব্যয়ভার বহন করেছে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech