ডায়ালসিলেট ডেস্ক:: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশে দেখতে গিয়ে প্রকৃতিপ্রেমীরা ঘন জঙ্গলে বেড়াতে গিয়ে খুঁজে পান প্রাচীন গিরিখাত। বিশ্বে মাত্র কয়েকটি গিরিখাত রয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি গিরিখাতের সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখানে। বিষয়টি তারা মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন। নিসর্গ গিরিখাত, উল্কা গিরিখাত ও ব্যাকুল গিরিখাত নামকরণ করা হয় প্রশাসন থেকে।
গিরিখাত রোমাঞ্চকর পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ জায়গা। হাজার বছর জলধারা প্রবাহিত হয়ে গিরিখাত গুলোর দু’পাশ খাডা পাথরে পরিণত হয়। পানির ক্রমাগত ধারায় পাহাড়ের গায়ে সৃষ্টি হয় মনমাতানো কারুকাজ।
শ্রীমঙ্গলের গিরিখাতগুলো বিশ্বের অন্যান্য গিরিখাতের মতোই। যেখানে এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়েছে ৩ টি গিরিখাত, বেশ কয়েকটি ঝর্না ও জলপ্রপাত। জায়গাগুলো প্রায় একই সার্কেলে তাই এর সবগুলোকে একত্রে নামকরণ করা হয়েছে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ যে ভাবে প্রকৃতিকে সম্বোধন করেছিলেন স্বর্গোদ্যান বলে এই নৈস্বর্গিক প্রকৃতাঞ্চলকে নামকরণ দেয়া হয়েছে “ শ্রীমঙ্গলের নৈস্বর্গিক স্বর্গ উদ্যান”।
ঢাকা থেকে জায়গাটির অবস্থান প্রায় ২১৫ কিলোমিটার, মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী সিন্দুরখান ইউনিয়নের ঘন জঙ্গলবেষ্টিত পাহাড়ী এলাকা। প্রথমে জীপ বা মোটর সাইকেল নিয়ে তার পর পায়ে হেঁটে কয়েক কিলোমিটার। হাঁটার পথ পাহাড়ী ছড়া ও খাড়া পাহাড়।
সম্প্রতি নৈসর্গিক জায়গাটি ঘুরে দেখে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুরো জায়গাটি পড়েছে স্থানীয় নাহার খাসি পল্লীর ভেতর। খাসি ভাষায় লাসুবন বা পাহাড়ী ফুল নামে ডাকা হয় এলাকাকে।দেখতে রোমাঞ্চকর হলেও এর যাতায়াতের পথে রয়েছে ঝুঁকি।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন, সীমান্তবতী এই স্থানে এখনো রাস্তাঘাট গড়ে ওঠেনি। সে কারণে কেউ যাতে ঝুঁকি নিয়ে আপাতত সেখানে না যান আমরা সেই পরামর্শ দিয়েছি। রাস্তাঘাট তৈরীসহ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের পর সীমিত আকারে পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান ইসলামের মতে পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। তিনি জানিয়েছেন, এটি দুর্গম এলাকায় পড়েছে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সরকারের নির্দেশ ব্যতিরেকে সেখানে যাওয়া সমীচীন হবে না। বিশ্বের অনান্য গিরিখাতের মতো এক সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫জন করে দিনে নির্দিষ্ট পরিমানে পর্যটককে এসব গিরিখাত দেখার সুযোগ করে দেয়ার দাবি প্রকৃতি প্রেমীদের।