সোহেল আহমদ পাপ্পু :: সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন কমিটি ঈদের পরেই যেকোনো সময় ঘোষণা করা হতে পারে।  ইতিমধ্যে এসব কমিটিতে যারা স্থান পেতে ইচ্ছুক সেই সকল নেতাদের কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট। এসব কমিটিতে স্থান করে নেয়া ছাত্রদল নেতাদের সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ঢাকার নেতৃবৃন্দরা ইতোমধ্যে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

একটি সূত্রে জানা যায়, যাচাই-বাচাইয়ের কাজ শেষ হলে ঈদের পরপরই সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন উপজেলা, পৌরসভা, মহানগরী ও কলেজ সহ ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদন পাবে।

সিলেটে জেলা ও মহানগরের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কমিটিতে এক তরফা স্থান পান কিনা এখন সেটি দেখার বিষয় ।

তবে এর আগে  ছাত্রদলের  অনেক  ত্যাগী নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। সেক্ষেত্রে  আবার দেখা যায়, অনেকে লবিং এর মাধ্যমে সিলেটের শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতায় বিভিন্ন পদে স্থান পাওয়ার চেষ্টা করেন । কমিটির বিভিন্ন পদে নিজেদের আসীন করে নিতে নেতাকর্মীদের যেন রাতের ঘুম হয়েছে হারাম। ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের জমা দেয়া কমিটিতে যাতে বাদ না পড়েন এতে করে চলছে নানা রকমের তদবীর।

এতে করে যারা দলের দূর্দিনে বিভিন্ন হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছেন অনেক সময় তাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়।

এজন্য ছাত্রদলের অনেক ত্যাগী নেতাদের মধ্যে জন্ম নেয় ক্ষোভ আর অভিমান । তবে এবারের কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্বের আসার আলো দেখা যেতে পারে।

সিলেট জেলার আওতাধীন ৩৩টি ইউনিট কমিটি এবং মহানগরীর এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজসহ ১৫টি ওয়ার্ড কমিটি একই সঙ্গে জমা দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে।

এবিষয়ে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গত ১৪ই ফেব্রয়ারী  সিলেট মহানগরীর ২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ড কমিটিসহ মদন মোহন কলেজ ও সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, এবং সিলেট ল’কলেজের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাকিগুলো ওয়ার্ডের আহবায়ক কমিটি গত ২৪ শে জুলাই শুক্রবার ঢাকায় বাংলাদেশ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিকট জমা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা যাচাই-বাচাই শেষে কারা স্থান পাবেন সেটি তারাই নির্ধারণ করবেন।

সিলেট জেলার আওতাধীন ১৩টি উপজেলা ও ৫ পৌরসভার এবং ছাত্রদলের জেলার আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলার ডিগ্রী কলেজে আরো ১৬টি শাখা কমিটি জমা হওয়ার কথা রয়েছে।

সিলেটের কমিটির গঠনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

পরে এ ব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম সাজুর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা সাংগঠনিকভাবে সকল নেতাদের নিয়ে যাচাই-বাচাই করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জমা দিয়েছি। তবে আমাদের জেলা ছাত্রদলের মধ্যে কোন কোন্দল নেই,তবে যারা দুদিনে,র্দুসময়ে বিভিন্ন হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন এবং দলের জন্য কাজ করেছেন তাদের নিয়ে আমরা আগামীতে শক্তিশালী দল গঠনের চেষ্টা করছি।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা তাদের যাচাই-বাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত নেতাদের নির্ধারন করা হবে। তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের স্বপ্ন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে আমরা সিলেটে জেলা ছাত্রদলের একটি শক্তিশালী দল গঠন করা হবে।

এবারের সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে নেতাদের আগ্রহ ও প্রত্যাশা বেশি। ছাত্রদলকে তৃণমূল পর্যায়ে চাঙ্গা করে রাখতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। তৃণমূলে অছাত্ররা যেন কমিটিতে স্থান না পায় এবং অবিবাহিতদের দিয়ে কমিটি, সে বিষয়ে কড়া নির্দেশনাও রয়েছে।

মূলত এবারেই ছাত্রদলের ইতিহাসে এ ধরণের আমুল পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সিলেটে জেলা ও মহানগর নিয়ে যে কমিটি করা হবে তা আহবায়ক কমিটি মাধ্যমে আগামীতে কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র নেতারা বলেন, সিলেটের শীর্ষ অনেক  নেতাদের ছত্র-ছায়ায় তাদের পছন্দমত নেতাদের বেছে নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তদবীর চালানো হয়।এজন্যই  ছাত্রদলের  অনেক  ত্যাগী নেতারা দলের পদ থেকে বাদ পড়েন। সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা  যাচাই-বাচাই করে এবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন আশা করা যাচ্ছে।

সবশেষে, সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের এখন অপেক্ষার পালা বাকি পদগুলোতে কারা স্থান পাবেন । ঈদের পরেই তার সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে কেন্দ্রীয় নেতাদের যাচাই-বাচাইয়ের তালিকার মাধ্যমে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *