প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০
ডায়ালসিলেট ডেস্ক::ভারতের রফতানি বন্ধ-এমন খবরে হঠাৎ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দুই দিন আগেও নিত্যপণ্যটির দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আজ (১৬ সেপ্টেম্বর) খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। পেঁয়াজ নিয়ে এখন কারসাজি চলছে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেশের মজুতদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এমন অবস্থায় সাধারণ ভোক্তারা আতঙ্কিত হয়ে চাহিদার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ কেনা শুরু করে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে খুচরা বাজারে ৬০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ১২০ টাকায় উঠেছে। তবে চাষি ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা এলসি খুলছেন। পেঁয়াজ নিয়ে এবার আগের মতো অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের নেতা মেসার্স আলী ট্রেডার্সের পরিচালক মো. শামসুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ‘ভারতের রফতানি বন্ধ-এমন খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জেলার মোকামের ব্যবসায়ী ও চাষিরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার ক্রেতারাও চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ বেশি কেনা শুরু করেছেন। হঠাৎ আমদানি বন্ধ ও চাহিদা বাড়ায় বাজারে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গত তিন দিনে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে গেছে। তবে গত দুই দিনের তুলনায় আজকে বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। আজ শ্যামবাজারের দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, বেশি বাছাই করা ভালোমানের পেঁয়াজ ৯০ টাকা এবং আমদানি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।’
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। গত সোমবারও দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৬০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
মুগদার খুচরা ব্যবসায়ী আল আমিন বললেন, গত পরশু থেকে পেঁয়াজের দাম বেশি। পাইকারি বাজারের ৪৫ টাকার পেঁয়াজ মঙ্গলবার ৮২ টাকায় কিনতে হয়েছে। ক্রেতারাও ইচ্ছামতো পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি বলেন, আগে যারা এক-দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতেন, তারা এখন ৫ থেকে ১০ কেজি পেঁয়াজ কিনছেন। এ কারণে দাম বেড়ে গেছে। আর পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে খুচরা বাজারেও দাম বেড়ে যায়।
পেঁয়াজের হঠাৎ দাম বাড়ার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে অভিযান করা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘কিছু ব্যবসায়ী আছেন যারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। বাজারে পেঁয়াজের কোনো অভাব নেই। আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। তারপরও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে তারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, একদিনে দ্বিগুণ দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। মজুতদার ও পাইকাররা বেশি মুনাফার লোভে এ কাজ করেছে।
পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশনায় সারাদেশে পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান করা হচ্ছে। যারা অনিয়ম করে দাম বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবসা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান অধিদফতরের এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি এক সঙ্গে চাহিদার বেশি পণ্য কিনলে সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে চাহিদার বেশি পণ্য না কেনার পরামর্শ দেন তিনি।
পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভারত রফতানি বন্ধ করেছে -এ খবরের কারণেই বাজারে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে এবার দেশের চাষি ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা এলসি খুলছেন। পেঁয়াজ নিয়ে এবার আগের মতো অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
তিনি বলেন, আজকেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে বলে শুনছি। এটি চালু হলেই বাজার আবার নিম্নমুখী হয়ে যাবে।
জানা গেছে, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সোমবার হুট করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় প্রতিবেশী দেশ ভারত। এরপর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি ছুঁয়ে দাম ওঠে ১২০ টাকায়।
এর আগে গতবছরও সেপ্টেম্বর মাসে কোনো ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। পরে দেশের ইতিহাসে পেঁয়াজের কেজি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এবারও সেই সেপ্টেম্বরেই ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিল। এতে পেঁয়াজের দাম আবারও অস্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে-এমন আশঙ্কায় কেউ কেউ বাড়তি পেঁয়াজ কেনা শুরু করেছেন।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech