প্রকাশিত: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২০
ডাযালসিলেট::
সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও বুধবার থেকে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাঙ্গালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়েই দূর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা ও শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে পূজামণ্ডপ। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পূজায় অনেকটা সীমাবদ্ধ থাকছে মণ্ডপগুলো। পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর মণ্ডপে দর্শনাথী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।
জানা যায়, মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা- এই তিন পর্ব মিলেই দুর্গোৎসব। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরপর বোধন দুর্গাপূজার প্রধান একটি আচার। ‘বোধন’ শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্তি। পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেল গাছের শাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। সাধারণত শুক্লা ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বোধন হলেও এবার তিথি অনুযায়ী পঞ্চমীতেই বোধন পড়েছে। তাই বুধবার সন্ধ্যায় সকল মণ্ডপে দেবীর বোধন হয়েছে। এ বছর মা দোলায় চড়ে আগমন ও গজে চড়ে গমন (প্রস্থান) করবেন। আগামী ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৬৪৬টি পুজা মন্ডপে দুর্গাপুজা অনুষ্টিত হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় মোট ৬৪টি পূজার আয়োজন করেছেন পূজারীরা। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৪৯টি ও পারিবারিক ১৫টি।
এবার সিলেট সদর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা হচ্ছে ৫৭টি। দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ২১টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ২০টি ও পারিবারিক একটি। গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৫৮টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা গত বছর থেকে ৪টি কম। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৫৫টি ও পারিবারিক ৩টি। বালাগঞ্জ উপজেলায় ২৯টি মন্ডপের সার্বজনীন পূজা ২৮টি ও একটি পারিবারিক। যা গত বছর থেকে দুইটি কম। কানাইঘাট উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৩৫টি। জৈন্তাপুর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ২২টি। বিশ্বনাথ উপজেলায় পূজামন্ডপ ২৬টি। গোয়াইনঘাট উপজেলায় এবার ৩৯টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলায় জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপজেলায় এবার সার্বজনীন পূজা ৮৪টি। যা গত বছর থেকে ৯টি কম। বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৫১টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। যা গত বছর থেকে ৪টি কম। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৩৮টি ও পারিবারিক ১৩টি।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর পূজা মণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক করোনা মুক্তির জন্য মহাসপ্তমীর দিনে ১২টা ১ মিনিটে মায়ের কাছে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। মায়ের ভাগের প্রসাদ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খিচুড়ি বা এ জাতীয় প্রসাদ বিতরণ এবং বিজয়ার শোভাযাত্রা এ বছর হবে না। মণ্ডপ থেকে সরাসরি বিসর্জন ঘাটে গিয়ে মাকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজা মণ্ডপগুলো অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, র্যাবসহ সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে। এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির বা মণ্ডপ প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূজা মণ্ডপে সমবেত সকলের জন্য করোনা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য একটি নির্দেশনা জারি করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ(এসএমপি)।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech