প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক পরিচয়ে প্রতারণা

প্রকাশিত: ১২:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২০

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক পরিচয়ে প্রতারণা

ডায়ালসিলেট ডেস্কঃঃ

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক, যুগ্ম সচিব, বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর প্রধান কর্মকর্তা কিংবা কখনো প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত করোনা প্রণোদনা প্যাকেজ প্রোগ্রামের চেয়ারম্যান।। একেক সময় একেক পরিচয়। যখন যে পরিচয় দিলে সুবিধা তখন সেই পরিচয় দিতেন আশরাফ আলী খান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়া ও প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাইয়ে দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিতেন মানুষের টাকা। প্রতারক আশরাফ ও তার সহযোগী শিক্ষানবিশ আইনজীবী কাদেরকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য।গত বুধবার(৪ নভেম্বর)  রাজধানীর মগবাজার থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলেও অভিযানের কথা আজ শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক পরিচয়ে প্রতারণা করা আশরাফের বাড়ি দিনাজপুরের খানসামায়। আর কাদেরের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলে। আশরাফের ফেসবুকে পরিচয় বিএনপি নেতা হিসেবে। সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীও ছিলেন। তার সহযোগী শিক্ষানবিশ আইনজীবী কাদের তাকে বিভিন্ন মামলা থেকে জামিন করিয়ে দেওয়ার কাজ করতেন।

তেজগাঁও থানায় মো. সালাহউদ্দিন নামের এক ট্রাকচালকের করা মামলায় এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সালাউদ্দিনের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দীনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আশরাফের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।

মামলার এজাহারে সালাহউদ্দিন বলেছেন, আশরাফ আলী প্রথমে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে করোনা মহামারি–সংক্রান্ত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। আশরাফ তখন তাঁকে ঋণ পেতে ইচ্ছুক এমন আরও দুজন লোক সংগ্রহ করতে বলেন। নিজের দুই বন্ধুকে রাজি করানোর পর আশরাফের সঙ্গে তিনি গত ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ নম্বর ফটকের সামনে দেখা করেন। তখন সেখানে আশরাফের সহযোগী আবদুল কাদির খানও উপস্থিত ছিলেন। তিনজনকে ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৩ লাখ টাকা কমিশন চান আশরাফ। দেনদরবার শেষে এক লাখ টাকায় রফা হয়।

সালাউদ্দিন বলেছেন, মৌখিক চুক্তির দিনই তাঁরা আশরাফকে নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন। এরপর বিকাশের মাধ্যমে দুই দফায় বাকি ৫০ হাজার টাকা দেন। এরপর আশরাফ তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে বলেন। সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করে তাঁরা আশরাফকে অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠান। কিন্তু টাকা আর তাঁদের অ্যাকাউন্টে আসে না। আশরাফ ও তাঁর সহযোগী ফোনও বন্ধ করে দেন। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এমন কেউ কাজ করেন না।

ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার জানান, আশরাফ গত বছর টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যুগ্ম মহাসচিব পরিচয়ে দেখা করেন। জেলা প্রশাসক তাঁর ভুয়া পরিচয় ধরতে পেরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছরের সাজা দেন। তখন আশরাফের পূর্বপরিচিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল কাদির খান তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর দুজন মিলে আবারও প্রতারণা শুরু করেন।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ