ডায়ালসিলেট ডেস্কঃঃ ভারতের উত্তর প্রদেশের বলরামপুর জেলার একজন সাংবাদিক ও তার এক বন্ধুকে অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ওই এলাকার গ্রাম প্রধানের ছেলেও রয়েছে। গত সপ্তাহে লখনৌ শহর থেকে ১৬০ কিঃ মিঃ দূরে কালওয়ারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

২৭শে নভেম্বর সাংবাদিক রাকেশ সিং নির্বাক (৩৭) ও তার বন্ধু পিন্টু সাহুকে (৩৪) কালোয়ারি গ্রামে রাকেশের বাড়িতে গুরুতরভাবে দগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। রাকেশ লখনৌ ভিত্তিক সংবাদপত্র ‘রাষ্ট্রীয় স্বরূপ’-এ কাজ করতেন। ঘটনাস্থলেই পিন্টু সাহুকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

রাকেশ সিং’কে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর কিছু সময় পর তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে রাকেশ সিং এক ভিডিও বার্তায় বলেন, তিনি নিয়মিতভাবে ওই গ্রামপ্রধান এবং তার ছেলের দুর্নীতির বিরূদ্ধে প্রতিবেদন লিখেছেন। তাই তাকে সত্য প্রকাশের দাম মেটাতে হচ্ছে। তার ওই ভিডিও বার্তাটি ছিল মাত্র ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের।

এ ঘটনার চার দিন পর বলরামপুর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্রামপ্রধানের ছেলে রিংকু মিশ্র। আটক অন্য দু’জন হলো আকরাম এবং আকরামেরই বন্ধু ললিত মিশ্র। পুলিশ জানায়, আসামীরা ওই দু’জনকে অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করে পুড়িয়ে মেরেছে। ওই সময় অভিযুক্তরা ঘটনাটিকে একটি নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আসামীরা অনেক ভুলভ্রান্তি ও সূত্র রেখে যায়। সে কারণে পুলিশের বুঝতে পারে যে, এটা একটি ষড়যন্ত্র। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান বলরামপূর পুলিশ প্রধান দেব রাজন বর্মা। অভিযুক্তদের এই ঘটনার পিছনে মূলত দুটি উদ্দেশ্য ছিল। এক রাকেশ সিং একজন সাংবাদিক এবং অন্যটি হলো সাহুর সাথে রিংকুর অর্থের লেনদেন। পুলিশ এ বিষয়ে ১৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
রাজন বর্মা  আরো জানান, রাকেশ সিং একজন নির্ভিক সংবাদকর্মী ছিলেন। তিনি অনেকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখেছেন। ওই গ্রামপ্রধানের বিরুদ্ধেও রিপোর্ট লেখার কথা ছিল তার। পুলিশের ভাষ্যমতে ২৭ শে নভেম্বর মিশ্র এবং সাহুর মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। এর ফলে অভিযুক্তরা এই হত্যাকান্ড ঘটায় বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *