আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

ধর্ষণের শিকার নারীদের কুমারীত্ব পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি আদালত। সোমবার (৪ জানুয়ারি) দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরের হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করেন। এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো আদালত এমন যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন বলে জানিয়েছে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এদিকে এই রায়ের মাধ্যমে নারী অধিকার আন্দোলনের জয় হয়েছে বলে মনে করেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের আশা শিগগিরই গোটা পাকিস্তানেই এই রায় আইন করে কার্যকর করা হবে।

রায় ঘোষণার সময় লাহোর হাইকোর্ট বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী যৌন হয়রানির শিকার নারীদের কুমারীত্ব পরীক্ষার কোনো ভিত্তি নেই। তাছাড়া এই পরীক্ষা ভুক্তভোগী নারীর ব্যক্তিগত সম্মানের জন্যও ক্ষতিকর।

সম্প্রতি ধর্ষকদের কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পাকিস্তানে বিদ্যমান ধর্ষণ প্রতিরোধে আইনেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কিন্তু কুমারীত্ব পরীক্ষা বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিয়ে এতোদিন দেশটিতে কেউ কোনো কথা বলেননি।

মূলত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই টু ফিঙ্গার টেস্ট এক বহু পুরনো প্রচলিত পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় চিকিৎসক বা মেডিক্যাল কর্মকর্তা ধর্ষণের শিকার নারীর যৌনাঙ্গে দুইটি আঙুল ঢুকিয়ে কুমারীত্ব পরীক্ষা করেন।

অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনেক আগেই জানিয়েছে, এই পরীক্ষার কোনো অর্থ নেই। এই পরীক্ষা থেকে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানাও যায় না। বরং এই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’র মাধ্যমে নারীকে অপমানই করা হয়।

পাকিস্তানে কুমারীত্ব পরীক্ষার প্রচলন বেশ আগে থেকেই রয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে দেশটির বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। একপর্যায়ে লাহোরের কাছে একটি আদালতে মামলা করা হয়। সেই মামলার রায়েই আদালত টু ফিঙ্গার টেস্ট বা কুমারীত্ব পরীক্ষা বন্ধের ঐতিহাসিক রায় দেয়।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *