সিলেটে ৭৯৬ নারী-শিশুকে ধর্ষণ-নির্যাতন

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২১

সিলেটে ৭৯৬ নারী-শিশুকে ধর্ষণ-নির্যাতন

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালে এক বছরে সিলেট অঞ্চলে ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭শ’৯৬ জন নারী ও শিশু। এরমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৭২ জন নারী। ধর্ষণ ছাড়াও বিভিন্নভাবে নারী ও শিশু মিলে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫২৪ জন। সিলেট রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগের ৪ জেলা ও সিলেট মহানগরীর ছয় থানা এলাকায় এক বছর ২৭২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে মহানগরীতে ৪৭টি ও ২২৫টি ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয় চার জেলায়।
এ সময়ে সিলেট মহানগর এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ধর্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন পন্থায় নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫২৭ জন। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১২০ জন। মহানগর এলাকায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪৯ জন।
সিলেট জেলা নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৩ হাজার ৪৭৬টি মামলা বিচারাধীন আছে; যা পরিচালনা করেন একজন বিচারক।
সিলেট জেলা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আতিকুর রহমান জানান, সিলেটে একটি মাত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। যেখানে বিচারাধীন আছে তিন হাজারের উপরে মামলা। আর পাশের জেলা হবিগঞ্জে তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। যার জন্য সিলেটে বিচার কার্যক্রম ধীরগতিতে পরিচালিত হচ্ছে।
দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির জন্য সিলেট আরও দুটি নারী শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল করার আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, ‘সিলেটের মানুষের মধ্যে দিন দিন সামাজিক অবক্ষয় আর অপসংস্কৃতি বৃদ্ধির ফলে এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ বাড়ছে। অপসংস্কৃতি দূর করতে না পারলে নারী নির্যাতন ধর্ষণ সমাজ থেকে কমানো কঠিন হবে। তবে পুলিশ মানুষের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করে যাচ্ছে।’
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘যদি কোনও এলাকায় নারী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর কোনও ঘটনা ঘটে আর কেউ যদি সে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
সিলেট বিভাগের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পুলিশের তৎপরতার কারণে সিলেট বিভাগে ধর্ষণের মামলা কিছুটা হলেও কমেছে। সমাজের সকলের কার্যকর ভূমিকা ও সমাজ থেকে অপসংস্কৃতি দূর করতে পারলে আগামীতে এমন ঘটনা আরও কমে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ থেকে নারী নির্যাতন দূর করতে জনসাধারণকে নিয়ে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া সমাজ থেকে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন চিরতরে নির্মূল করতে অতীতের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে কাজ করছে পুলিশ।’

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন বলেন, ‘নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা শুরু থেকে তদন্তে দুর্নীতি আর রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে পার পেয়ে যায় প্রকৃত অপরাধীরা। এ জন্য সমাজে বাড়ছে অপরাধ। ভয়াবহ এসব মামলা তদন্তে সরকারের আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ