প্রকাশিত: ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক::করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে দফায় দফায় দেয়া হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে ‘লকডাউনের’। এ অবস্থায়ও বিধিনিষেধ মানছে না মানুষ। সাধারণ মানুষকে বিধিনিষেধের মধ্যে রাখতে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগেও ঢিলেমি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি। অবস্থা এভাবে চলতে থাকলে সামনে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কমিটি।
কমিটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কঠোর বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে কমিটি মনে করে।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ও সদস্যদের উপস্থিতিতে ৩৪তম অনলাইন সভায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা শেষে গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো কমিটির সুপারিশগুলোতে বলা হয়:-
সরকার আরো এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ বাড়িয়েছেন। কমিটি বিধিনিষেধের প্রয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ঈদ পূর্ববর্তী যাতায়াত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। ঈদের পরে একই ভাবে মানুষ ফিরে এলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশংকা বাড়বে। ঈদের পরে কল-কারখানা পর্যায়ক্রমে খোলা হলে জনসাধারণকে একযোগে ঢাকায় ফিরতে হবে না। কমিটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কঠোর বাস্তবায়নের সুপারিশ করে। এক্ষেত্রে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে সভা মনে করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতালির করোনা রোগীর পোস্টমর্টেম সংক্রান্ত একটি তথ্যসহ বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা নিয়ে আলোচনা হয় সভায়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের উদ্ধৃতি দিয়েও বিভিন্ন ভুল তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেখা যায়। সভা মনে করে প্যানডেমিকের সময় এই ধরনের “ইনফোডেমিক” জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য তা হুমকিস্বরূপ হতে পারে। জাতীয় কমিটি এ বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়।
ভারত থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয় কমিটির তরফে। ১৪ দিন পর পিসিআর পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলেই কেবলমাত্র ছাড়পত্র দেয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয়া হয় কারিগরি কমিটির ওই সভায়। এ ছাড়া বর্ডার এলাকা দিয়ে অনানুষ্ঠানিক যাতায়াত কঠোর ভাবে বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়। ভারতে সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে সীমান্তে চলাচল বন্ধ অব্যাহত রাখতে বলেছে কমিটি।
সভায় হাসপাতালসমূহে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। কমিটি এই সব পদক্ষেপ এর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করে। কমিটি মনে করে অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করে পরনির্ভরতা কমানো প্রয়োজন। সকল জেলা হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটর স্থাপনের সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানো হয়। এ ছাড়াও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও সিলিন্ডার পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়াও মারাত্মক রোগীর চিকিৎসার জন্য ভেন্টিলেটর ছাড়াও বাই প্যাপ, সি প্যাপ ও হাই ফ্লো অক্সিজেন ক্যানোলা সকল জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। স্বল্পমূল্যে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন সরবরাহের উদ্দেশ্যে বুয়েটের একটি গবেষক দলের প্রয়াসকে অভিনন্দিত করা হয়। এই কার্যক্রমে সরকার পৃষ্ঠপোষকতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এটি দেশের জন্য আশাব্যঞ্জক খবর এবং এর সফল বাস্তবায়ন পরনির্ভরশীলতা কমাতে ভূমিকা রাখবে। সভায় শ্রীলঙ্কা টিম বাংলাদেশে আসা ও খেলা অনুষ্ঠান বিষয়ে আলোচনা হয়। অনুশীলন ও খেলা চলাকালীন সময়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে।
বৈশ্বিক সংকট এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা না পাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক ও সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ও বিকল্প অনুসন্ধান করছে। প্রথম ডোজের ৮-১২ সপ্তাহের ভিতরে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেয়া যায়, কোন কোন দেশ ১৬ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান করছে। এই ব্যাপারে সকলকে ধৈর্যশীল হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় কমিটির পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্য বিভাগকেও এ ব্যাপারে টিকার পরিস্থিতি ও সরকারের বিকল্প পরিকল্পনা জনগণকে অবহিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। ভ্যাকসিনের জন্য পরনির্ভরতা কমাতে উৎপাদনের জন্য দ্রুত সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রয়োজন বলে কমিটি মতামত দিয়েছে। সংক্রমণ শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরীক্ষা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech