ডায়ালসিলেট : সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রবিবার রাতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গত১০ জুন রাতে বুধবার পরীমণি তার নিজের কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে চান। এ কথা শুনে পরী ও জেমীর সঙ্গে তাদের পূর্বপরিচিত অমিও যেতে চান। জেমীর মাকে দেখতে যাওয়ার পথে উত্তরা বোটিং ক্লাবের কাছে গিয়ে অমি জানান তার সেখানে একটু কাজ আছে। অমি তাদেরকে বলেন- যেহেতু এখানে এসেছি, তোমরা একটু সময় দিলে ভালো হতো আমার উত্তরা বোটিং ক্লাবে একটা কাজ আছে। তার কথায় পরীমণি ও জেমী উত্তরা বোটিং ক্লাবে কিছু সময়ের জন্য যায়। এরপর সেখানে ১০ মিনিট বসার পর জেমী ওয়াশরুমে যেতেই তাকে সেখানে আটকে দেওয়া হয়।
উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ চার-পাঁচজন ব্যক্তি এসে পরীকে মদের অফার করেন। কিন্তু পরীমণি তাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয় এবং চড়-থাপ্পড় মারে। এমনকি ধস্তাধস্তি করে পরীর গায়ে আঘাতও করা হয় বলে জানান পরীমনি।
এদিকে পরীমনি তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাইছেন?
এদিকে, ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন পরীমনি। তিনি অভিযোগ করেন, সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তাঁর অভিযোগ রেকর্ড করেননি। বরং সকালে এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। এ সময় পুলিশের সাহায্যে পরীমনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনায় মারাত্মক ভেঙে পড়েছেন পরীমনি। ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এর আগে পরীমনি বলেন, ‘আমাকে রেপ এবং হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ অভিযোগ করেছিলেন তিনি। পরে রোববার সন্ধ্যায় ফেসবুক পোস্টে এ অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেছেন তিনি। রাতে নিজের বনানীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানান এই ঢালিউড তারকা।
ফেসবুকে পরীমনি লিখেছেন, ‘আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এই বিচার কোথায় চাইব? কে করবে সঠিক বিচার?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মা’ সম্বোধন করে পরীমনি লিখেছেন, ‘চার দিন ধরে থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধুদের কাউকে পাই না মা। যাদেরকে পেয়েছি, সবাই বিস্তারিত ঘটনা জেনে “দেখছি” বলে চুপ হয়ে যায়!’
কোথাও প্রতিকার না পেয়ে পরীমনি লিখেছেন, ‘আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা যদি “আমি মেয়ে”, “লোকে কী বলবে” এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারও কী করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো কি চুপ করে থাকতে পারি, মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!’
শৈশবে মা হারানোর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মা যখন মারা যান, তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এত দিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার মনে হয়নি। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে, মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার। আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা, আমি বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’
পরীমনির গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি বিষয়টি সবাইকে বলতেই চাই। ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে জানিয়েছি। তারা আমাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু চার দিন ধরে অপেক্ষা করছি কোন কেউ আমাকে সাহায্য করেননি। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর সুষ্টু বিচার চাই।