প্রকাশিত: ১:২০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: ২০৬০ সালের মধ্যে দেশকে কার্বন নিরপেক্ষ করবেন বলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অঙ্গীকার করেছেন। তার মধ্যে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না’র (সিপিসি) শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাঁধ ‘বাইহেতান’ এর কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। যদিও এই প্রকল্প নিয়ে চীনের স্থানীয় আবাস, উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের পরিবেশগত ধ্বংস এবং এশিয়ার দীর্ঘতম নদী ইয়াংজির স্থানীয় প্রজাতির শুশুকের বিপন্ন হওয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। খবর গ্রিস ভিত্তিক গণমাধ্যম পেন্টাপোস্ট্যাগমার।
এদিকে, তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ–পূর্ব প্রান্তে নির্মিত ২৮৯ মিটারের বাইহেতান জলবিদ্যুৎ বাঁধের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৬ হাজার মেগাওয়াট। এই প্রকল্পের এক দিনের উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে ৫ লাখ মানুষের সারা বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব।
এছাড়া চীনে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার দিক থেকে তাদের থ্রি জর্জেজ ড্যাম নামের বাঁধ প্রকল্প অনেক আগে থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইয়াংজি নদীর উপরে নির্মিত ২৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের কারণে এক মিলিয়ন মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়। যদিও এই বাঁধ প্রায়ই পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা বিষয় হয়েছে। এমনকি থ্রি জর্জেজ ড্যামের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
তবে এবার এই ‘বাইহেতান’ বাঁধ নিয়েও বেশ কিছু পরিবেশ বিশেষজ্ঞ গ্রুপ এই বাঁধকে সরাসরি উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের জন্য হুমকি হিসেবে প্রশ্ন উঠছে। কেননা এই বাঁধের কারণে ইয়াংজি নদীর পানিতে পলির মিশ্রণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখালেখিও হয়েছে
বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এলসেভিয়ার তাদের একটি জার্নালে এ সংক্রান্ত লেখা প্রকাশ করেছে। সেখানে লেখক ব্যাখ্যা দিয়ে তুলে ধরেছেন নদীর উপরে নির্মিত এই বাঁধ কিভাবে মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। এতে মানবদেহের স্বাস্থ্যের বিপর্যয় ও নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই ধরনের প্রকল্প যে কোনো নদীর উপকূল ও তীরবর্তী মানববসতি, উদ্ভিদ এবং প্রাণিকুলের জন্য অনেকটা হুমকির কারণ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাঁধ বাইহেতানও চীনের থ্রি জর্জেজ ড্যামের একই রকম পরিণতির মুখোমুখি হবে। কেননা, তাড়াহুড়ো করে যথাযথ পরিবেশগত ছাড়পত্র ও প্রয়োজনীয় গবেষণা ছাড়াই এত বড় আকারের অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেছে চীন।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিশেষজ্ঞ চীনের থ্রি জর্জেজ ড্যাম প্রকল্পকে ‘সব পরিবর্তনের হোতা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
তিনি তখন এই প্রকল্পের কারণে পানিবাহিত রোগ বেড়ে যাওয়া ও বর্ধিত ভূমিধস নিয়েও সতর্ক করেন। যার কারণে ২০০৭ সালে থ্রি জর্জেজ ড্যাম প্রকল্পের পাশে একটি রেলওয়ে ট্যানেল ধসে পড়ে। এতে অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি হয়।
এখন ‘বাইহেতান’ প্রকল্প চালু হওয়ার পর এই ধরনের পরিণতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্বেগ বেড়েছে।
এদিকে, ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও মহামারী পরবর্তী চীনের বর্তমান অবস্থা দেখে তা মনে হচ্ছে না। চীনে পরিবেশগত উদ্বেগ প্রায় সব সময় উপেক্ষিত হয়েছে তাদের শিল্প উৎপাদন স্পৃহার কাছে, আর তাদের বৃহৎ জলবিদ্যুৎ বাঁধও এই গণ্ডির বাইরে নয়। তবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বর্তমান ফোকাস হচ্ছে শিল্প উত্পাদন বৃদ্ধি ও কাঠামোগত অগ্রগতি ব্যবস্থা।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech