কুষ্টিয়ার ৩৭ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত: ৫:০৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২১

কুষ্টিয়ার ৩৭ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দুই ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৭টি গ্রাম ও চিলমারী ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হওয়ায় গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। বেড়েছে তাদের চরম দূর্ভোগ দূর্দশা।

গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের দুই ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে রয়েছে ওইসকল গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ। বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে আমন ধান, পাটক্ষেত, মরিচক্ষেত, কলাবাগান ও পানবরজসহ বিভিন্ন ধরণের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও পশু খাদ্যের সংকট। কোমর অথবা হাঁটু পানির মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে বন্যাকবলিতদের।

খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় তারা সাহায্য ও সহযোগিতার দাবিও করেছেন।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে, হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার আট সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরপর পাঁচ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। আগামী কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।আজ শুক্রবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা পানিবন্দি গ্রামগুলো ঘুরে দেখেন। বন্যাবকবলিতদের ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, চরাঞ্চলের রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের ত্রাণ সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে জেলা প্রশাসক স্যার এক মেট্রিক টন চাল ও নগদ তিন লক্ষ টাকা বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ করেছেন। সেগুলো যতদ্রুত সম্ভব বন্যার্তদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ভাদ্রের শুরুতেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। গেল কয়েক দিনের বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে-ঈশ্বরদীর পদ্মা নদীতে হু হু করে পানি বাড়ছে।

ঈশ্বরদীতে পদ্মার বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ মিটার। আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৭ মিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই প্রায় সাত থেকে আট সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে নদীতে। ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়ন আড়ামবাড়িয়া ও গোপালপুর নদীর তীরবর্তী এলাকায় ইতোমধ্যে বাঁধের ওপর দিয়ে পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এভাবে পানি বাড়লে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পদ্মায় ১৪ দশমিক ১৭ মিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একদিনে ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার আট সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে আরো পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতও সময় আসেনি। কারণ আগামী অক্টোবর পর্যন্ত পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে থাকবে।

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares