আন্তর্জাতিক  ডেস্ক::রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিপাইনের বহুল বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে। তিনি বলেছেন, আগামী বছর নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তার চেয়ে বর্তমান ক্ষমতার মেয়াদ শেষে তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন। উল্লেখ্য, তিনি আর ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সক্ষমতা রাখেন না। আজ শনিবার বিস্ময়র এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন রড্রিগো দুতের্তে। দীর্ঘ সময় তার সাবেক সহযোগী সিনেটর বোঙ্গ গো-এর সঙ্গে সাক্ষাত করে এ ঘোষণা দেন তিনি। দেশটিতে নির্বাচন কমিশনে এরই মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার ফাইল জমা দিয়েছেন সিনেটর বোঙ্গ গো। প্রেসিডেন্ট দুতের্তে বলেন, বেশির ভাগ ফিলিপিনোর সেন্টিমেন্ট হলো, আমি আর যোগ্য নই। তাই যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হই তা হবে সংবিধানের লঙ্ঘন, সংবিধানের মর্যাদার লঙ্ঘন। তাই আমি রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিলাম। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী ফিলিপাইনে একজন প্রেসিডেন্ট এক মেয়াদে ৬ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারেন। বিরোধীরা আগেই হুমকি দিয়েছিল। তারা বলেছিল, দুতের্তে যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হন তাহলে তার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তারা। তবে বাতাসে শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। তা হলো, নিজে রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে মেয়ে সারা দুতের্তে-ক্যাপ্রিও’কে পথ করে দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট দুতের্তে। ফলে সারা দুতের্তে-ক্যাপ্রিও তার স্থান পূরণ করতে পারেন। তার পিতা দুর্তেতে ছিলেন ফিলিপাইনের ডাভোস শহরের মেয়র। তিনি সেখানকার আসন ছেড়ে দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করলে তার স্থান দখল করেন কন্যা সারা দুতের্তে-ক্যাপ্রিও। তিনি গত মাসে বলেছেন, আগামী বছর তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করছেন না। কারণ, তিনি এবং তার পিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের মধ্যে শুধু একজন ২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অ্যান্তোনিও ডি ম্যানিলা ইউনিভার্সিটির আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর অ্যান্তোনিও লা ভিনা বলেন, ফলে এখন সারা দুতের্তে-ক্যাপ্রিও’র জন্য নির্বাচনের পথ খুলে গেল। তবে রড্রিগো দুতের্তে যে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন না, এমনটা বলা যায় না। এমনও হতে পারে বোঙ্গ-গো’র স্থানে তিনিই প্রার্থী হয়ে বসেছেন। দেশটিতে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের নিবন্ধিত হতে সময় ছিল শুক্রবার পর্যন্ত। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, জমা দেয়া যাবে ১৫ই নভেম্বর পর্যন্ত। এর ফলে দুতের্তের মন শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ আছে, যেমনটি হয়েছিল ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়। তখন তিনি বড় ব্যবধানে জিতেছিলেন। আগস্টেই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনের সময় তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করবেন। বিশ্লেষক এবং সমালোচকরা মনে করেন, তিনি ক্ষমতা ছেড়ে গেলে ক্রিমিনাল চার্জের মুখে পড়তে পারেন, এ ভয়ে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি একটি একক ইস্যুতে লড়াই করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ওই ইস্যুটি হলো অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করা। তিনি নির্বাচনী প্রচারণার সময় এবং পরে প্রেসিডেন্ট হয়ে পুলিশকে বার বার আহ্বান জানিয়েছেন সন্দেহজনক মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করতে।

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *