স্পোর্টস ডেস্ক:;মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কি অবসর নিবেন! যেমনটা হঠাৎ করেই নিয়েছিলেন টেস্ট থেকে। নাকি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক কেন পদ হারাচ্ছেন! বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে তার যে দূরত্ব আপাতত মনে হচ্ছে তাকে আর অধিনায়কই রাখা হবে না। আগেই জানা ছিল এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। তবে পারফরমেন্স অন্যরকম হলে হয়তো বদলে যেতো সবকিছু। কিন্তু বিশ্বকাপ মঞ্চে বাছাই পর্বে টেনে টুনে পাস করেছে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর ওমান ও পিএনজির সঙ্গে জিততে ঘাম ঝরাতে হয়েছে তার দলকে। এরপর সুপার টুয়েলভ পর্বে টানা দুই হার। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের ভুল আর হেলায় বরণ করতে হয়েছে পরাজয়। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোটা দলই যেন করেছে অসহায় আত্মসমর্পণ। আজ তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আর শেষ দুটিতে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। প্রশ্ন হচ্ছে এই তিন দলের বিপক্ষে জয় সম্ভব টাইগারদের নাকি ফিরবে শূন্য হাতে! আর সেটি হলে মাহমুদুল্লাহ’র ভাগ্য কোন দিকে যাচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবি একটি সূত্র বলেন, ‘বিশ্বকাপ খেলা চলছে। এমন সময় কেউ সরাসরি কিছু বলতে চাচ্ছে না। অধিনায়কের যে পারফরমেন্স এতে বিসিবির সন্তুষ্ট হওয়ার মতো কিছুই নেই। তার ওপর তার নানা মন্তব্য ও সিদ্ধান্তে নাখোশ বিসিবি সভাপতিও। তাই আমার মনে হয় না অধিনায়ক হিসেবে তার আর থাকা হচ্ছে দলে।’
বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের দলের পারফরমেন্স দেখে ভীষণ চটেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন দলের কোন্দল নিয়েও। এক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও করেছেন পাল্টা মন্তব্য। বলতে গেলে বোর্ডের সঙ্গে তার অবস্থান এখন মুখোমুখি। শুধু তাই নয় বিসিবি সভাপতি জিম্বাবুয়ে টেস্টে খেলা চলাকালে তার ড্রেসিং রুমে অবসরের ঘোষণাতেও ক্ষেপেছেন দারুণভাবে। এবারো শঙ্কা রয়েছে বিশ্বকাপ শেষ হতেই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা নিয়ে। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, এমন পারফরমেন্সের পর রিয়াদ নিজেও সম্মানে দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চাইবেন। কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে তিনি হয়তো অবসর নিতে পারেন টি-টোয়েন্টি থেকেও। এমন সব ঘটনা ঘটতে পারে তার অনুমান করার কারণও আছে। শুধু বিসিবির সঙ্গেই অধিনায়কের দূরত্ব বাড়েনি প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। আর তামিম ইকবালের সঙ্গে তার আন্তঃকোন্দলের কথা এখন তো ওপেন সিক্রেট ব্যাপার।
গেল জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট সিরিজে একাদশে জায়গা পেয়ে মাহমুদুল্লাহ ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেন। তার আগে তার টেস্ট খেলার সামর্থ্য নিয়ে ছিল নানা প্রশ্ন। শোনা যাচ্ছিল কোচই তাকে টেস্ট দলে জায়গা দিতে চান না। তবে সেই সময় রিয়াদ ছিলেন নীরব। মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে ব্যাটেই জবাব দিয়েছিলেন নানা সমালোচনার। সেই সঙ্গে অভিমান করেই টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন সেই টেস্ট ম্যাচ চলাকালে। তবে সংবাদ মাধ্যমে তিনি কখনোই সরাসরি বলেননি যে অবসর নিয়েছেন। বরঞ্চ সংবাদ মাধ্যমকে তিনি কথা বলার সময় টেস্ট অবসর নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বলতে গেলে তার বোর্ড ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এখন চরমে। তাই ক্রিকেট বোদ্ধা থেকে ভক্ত সমর্থকদের শঙ্কা মাহমুদুল্লাহ হারাতে পারেন নেতৃত্ব। আবার হতে পারে রাগ অভিমানে তিনি নিতে পারেন অবসরও!
ডায়ালসিলেট এম/