প্রকাশিত: ১০:১১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক::বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় অংশীদার হতে বৃটিশ উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বৃটিশ প্রবাসীদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হবে। একইসঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ সেন্টারের চার্চিল হলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ অ্যান্ড রোড শো’র ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতিনিধি দেশটির ট্রেড ও পলিসি প্রতিমন্ত্রী পেনি মরডাউন্ট বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকে উদ্বুদ্ধ করতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই রোড শো’র আয়োজন করেছে। আগামী ৮ই নভেম্বর যুক্তরাজ্যে ম্যানচেস্টারে এরকমই আরেকটি রোড শো অনুষ্ঠিত হবে। বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে এম আব্দুল মোমেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. জোসে ভিনালস, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমতুল মুনিম প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, লাইন ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, ব্লু-ইকোনমি, ট্যুরিজম, হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় সেক্টরে সুবিধা নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। বৃটিশ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের জন্য এসব সেক্টর বা এর বাইরে যেকোনো সেক্টর বেছে নিতে পারেন।
বিনিয়োগের জন্য বৃটিশ উদ্যোক্তাদের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেছে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বিশেষ কোনো একটি দেশের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারে। যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য সে রকম কোনো একটি অঞ্চল বেছে নিতে পারে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ২৮টি হাইটেক পার্ক প্রস্তুত করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জানান, বিনিয়োগের সর্বোত্তম সম্ভাব্য রিটার্ন পেতে বৃটিশ বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করা হবে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে সফলভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এভাবে আরও অনেক কোম্পানিকে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসার এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ করার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও নিজের দেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিদেশে আছেন, এখন নিজের দেশে আসেন, বিনিয়োগ করেন। আর এখানে (লন্ডনে) যারা ব্যবসা করছেন, আপনারা বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রি করতে পারেন। আপনাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। আপনারা এখন এ দেশে (যুক্তরাজ্যে) ভাত-কারি ও মাছ খেতে পারছেন। দেশের কৃষি খাত বড় সফলতা অর্জন করেছে। এখন আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর কোনো কিছু হলে আমি তো আছিই। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উপভোগ করছে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ায় যারা এগিয়ে এসেছে যুক্তরাজ্য তাদের মধ্যে অন্যতম। তখন থেকে দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। প্রত্যেকেই বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্ন পাচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক কান্ট্রি। এ ছাড়া গ্রিন কারখানার মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ দশে রয়েছে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন টেকসই উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে বলে জানান সালমান এফ রহমান।
বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের অনেক উন্নতি হয়েছে। এশিয়ার শেয়ারবাজারের মধ্যে সর্বোচ্চ রিটার্ন বা মুনাফা দিয়েছে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিনিয়োগে আহ্বান করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বৈশ্বিক অস্থিরতা শোষণ ক্ষমতা রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার স্ট্যাবল, সুদ হার অনুকূলে, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পূর্বানুমতির দরকার পড়ে না, নিটা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সহজেই বিনিয়োগ করা যায়, মুনাফাসহ রিটার্ন ফেরতের ক্ষেত্রেও অনুমতি নিতে হয় না। সুতরাং খুব সহজেই বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে।
ডায়ালসিলেট এম/
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech